বুধবার, ২ মার্চ, ২০২২

বিমানের দিকে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করা কেন অপরাধ?

বিমানের দিকে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করা কেন অপরাধ?

আকাশে যদি একটি লেজার লাইট মারা হয়, তাহলে আপনার মনে হতে পারে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত যেয়ে এ লাইট নিশ্চয় থেমে যাবে। আকাশে উড়া বিমান পর্যন্ত হয়তো পৌঁছাবে না। তবে এ কথা সত্য নয়।  এমনকি একটি খুবই স্বল্প মানের শক্তি সম্পন্ন লেজার রশ্মি বিমান যে উচ্চতায় সচরাচর উড়ে, সে উচ্চতা পর্যন্ত যেতে সক্ষম। নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন। একটি এক মিলিওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন লেজার রশ্মি ২০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত ঠিকঠাকভাবে পৌঁছে গেছে।  এই লেজার রশ্মি বিমানের পাইলটের অস্বস্তির কারণ হতে পারে। এমনকি এ লেজার রশ্মি পাইলটের চোখে গেলে পাইলট সাময়িক অন্ধও হয়ে যেতে পারেন।  আরেকটি বিষয় একটু লক্ষ্য করুন। একটি রশ্মি যত দূড় যাবে, এটির বিস্তৃতিও তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। একটি মিলিমিটার ডট আকারের লেজার রশ্মি কয়েক কিলোমিটার দূড়ে এক ইঞ্চি পরিমাণ বিস্তৃতি জায়গা জুড়ে দিতে পারে। এতে বিমানের পাইলট নানা ভুল ধারণা পেতে পারেন ও বিমান চালানোর সময় নানা ভাবে বিরক্তি বোধ করতে পারেন। এর ফলাফল স্বরূপ বিমানের ক্র্যাশ ল্যান্ডিংও হতে পারে।  শাস্তি  আমেরিকার ফেডারেল কোর্টের নিয়ম অনুসারে প্রয়োজন ছাড়া বিমানের উদ্দেশ্যে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। ২০০৮ সালের অক্টোবরে ক্যালিফোর্নিয়ার একজন ব্যক্তিকে ৩ মিলিওয়াটের একটি লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করার কারণে ২ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। ২০১৩ সালে ১ মিলিওয়াটের বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন লেজার রশ্মির ব্যবহারকে নিউজিল্যান্ডে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের সংবিধানে ২০১৭ এর ধারা ২৬ অনুসারে বিমানকে লক্ষ্য করে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ শাস্তিযোগ্য ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এ মর্মে গত ১৭ জুন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেবিচক।
 তথ্যসূত্র Laser Pointer Safety Com and Wikipedia

সমুদ্রের পানি নীল রং এর হয় কেন?

সমুদ্রের পানি নীল রং এর হয় কেন??

সমুদ্রের বিস্তৃত জলরাশিকে একসঙ্গে নীল দেখায়। আকাশে বাতাসের অণুর মতো সমুদ্রের বিস্তৃত জলরাশির অণুগুলো সূর্যরশ্মির নীল বর্ণকে চারদিকে ছড়িয়ে দেয়। ফলে বাইরে থেকে তাকালে সমুদ্রের জলরাশিকে নীল দেখায়।

আমরা জানি সূর্যের আলো বা রোদ মূলত ৭ টি ভিন্ন ভিন্ন রঙের সমষ্টি। বেগুনী, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। রঙগুলো বিশেষ মাত্রায় একের পর এক সাজানো থাকে। সূর্যের আলো যখন সমুদ্র পৃষ্ঠে পড়ে তখন লাল কমলা ও হলুদ রঙ সমুদ্রের জল কর্তৃক দ্রুত শোষিত হয় বটে, কিন্তু নীল রঙ আরও দ্রুত সমুদ্র গর্ভের প্রায় ৩০ মিটার পর্যন্ত ঢুকে পড়ে। যে কারণে রোদেলা দিনে সমুদ্রকে নীল দেখায়।

ক্যামেরায় তোলা সমুদ্রজলের ফটো 

নীল আকাশের প্রতিফলনের কারণে বড় লেক বা সমুদ্রের পানি নীল দেখায় এটা আমরা সাধারণভাবে ধরে নিই। কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়। আসলে পানির রঙ নীল এবং সে কারণেই মূলত সমুদ্র নীল দেখায়। কথাটা সহজে বিশ্বাস হয় না। মনে হয় পানির তো কোনো রঙ নেই। এক গ্লাস পানির দিকে তাকালেই এটা বোঝা যায়। তাহলে আমরা কীভাবে বলব যে পানির রঙ নীল? এ বিষয়টি বোঝার জন্য আমরা পানিতে আলোর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারি। পানির অনুগুরো কিছু পরিমাণ আলো শুষে নেয় এবং এ সময় নীলের চেয়ে লাল তরঙ্গের আলো বেশি শোষিত হয়। ফলে আলের মিশ্রণে পানি কিছুটা নীলাভ রঙ ধারণ করে। কিন্তু এটা এতই সামান্য যে সহজে বোঝা যায় না। সমুদ্র বা বড় লেকের পানির পরিমাণ ও গভীরতা বেশি বলে সেখানে নীলের আধিক্য চোখে ধরা পড়ে। তবে লবণ ও অন্যান্য খনিজের রঙও সমুদ্রের পানিতে কিছুটা দেখা যায়। পরিষ্কার নীল আকাশ থাকলে তার প্রতিফলনও সমুদ্রের পানিতে ঘটে কিন্তু সেজন্য সমুদ্র মোটামুটি শান্ত থাকতে হবে আর সেই নীল আকাশের ছায়া দেখার জন্য একটু নিচু হয়ে অন্তত ১০ ডিগ্রির কম কোণে তাকাতে হবে। অনেক সময় সমুদ্রের পানি সবুজ দেখায়, কারণ সমুদ্রে অনেক শৈবালজাতীয় সবুজ উদ্ভিদ থাকে। সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের সময় বালু ও মাটি সমুদ্রের পানির ওপরের দিকে চলে আসে। তখন সমুদ্রের পানি ঘোলা বা ছাই রঙ ধারণ করে।