শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩

বাংলাদেশের সাপ (বিষধর, স্বল্পবিষধর এবং নির্বিষ)(Snakes of Bangladesh)

 

বাংলাদেশের সাপ: বিষধর, স্বল্পবিষধর এবং নির্বিষ (Snakes of Bangladesh)

আমাদের দেশে  কতো প্রজাতির (Species) সাপ  আছে এবং এই পৃথিবীতে কতো প্রজাতির সাপ আছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব জানা প্রায় অসম্ভব। কারন নিত্যনতুন প্রজাতির আবিষ্কার এটাকে দুরূহ করে তুলেছে। যেমন আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়াতে আমাদের দেশের থেকে বেশি প্রজাতির সাপ রয়েছে। তাই সে দেশ থেকে যেসব প্রজাতির সাপ আমাদের দেশে নেই সেইসব প্রজাতির সাপ সীমান্ত অতিক্রম করে আমাদের দেশে আসতে পারে এবং এখানে প্রজননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। সামুদ্রিক সাপের পক্ষে এটা আরো সহজ ব্যাপার। আবার ইন্ডিয়াতে ও একই ব্যাপার ঘটতে পারে। সুতরাং এটা বলা খুব কঠিন ঠিক কত প্রজাতির সাপ বাংলাদেশে আছে। বিভিন্ন গবেষকদের মতে আমাদের দেশে এলাপিডি (Elapidae), ভাইপারিডি(Viperidae), কলুব্রিডি (Colubridae), হাইড্রফিডি(Hydrophiidae),   এক্রোচোরডিডি(Acrochordidae),  পাইথনিডি (Pythonidae), বোইডি(Boidae), টাইফ্লোপিডি (Typhlopidae) পরিবারের (Family) প্রায় ৯৫-১০০ প্রজাতির সাপ আছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ প্রজাতির সাপ বিষধর (Venomous), মানে এদের বিষ মানুষের জন্য মারাত্মক। আর  প্রায় ২০ প্রজাতির সাপ স্বল্পবিষধর (Mildly-venomous) অর্থাৎ এদের বিষ আমাদের জন্য মারাত্মক নয়। এবং বাকি সাপ নির্বিষ (Non-venomous)। বিষধর সাপের কামড়ের ক্ষেএে অবশ্যই বিষপ্রতিষেধক(Anti-venom) প্রয়োজন। বিষপ্রতিষেধক দু প্রকারের Monovalent anti-venom (নির্দিষ্ট প্রজাতির জন্য) আর Polyvalent anti-venom (দুই বা তার বেশি প্রজাতির জন্য) পক্ষান্তরে স্বল্পবিষধর এবং নির্বিষ এর ক্ষেত্রে বিষপ্রতিষেধকের প্রয়োজন হয় না। তবে স্বল্পবিষধর সাপ যদি বারংবার কামড় দেয় এবং কামড় দিয়ে ধরে রাখে অথবা ছোট বাচ্চাদের কামড়ায় সে ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেএে তেমন কিছুই হয় না। স্বল্পবিষধর সাপের বিষ সাধারনত ছোট শিকারের (Small prey) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেমন পাখি,ইদুর,ব্যাঙ ইত্যাদি। সুতরাং কেউ যদি বিষধর সাপের কামরে আক্রান্ত হন তাহলে তাকে অবশ্যই এবং খুব শীঘ্র বিষপ্রতিষেধক (Anti-venom) নিতে হবে। বিষধর সাপের কাপড় যেটা একটি তড়িৎ চিকিৎসীয় ব্যাপার সেক্ষেত্রে কুসংস্কারমুলক পদ্ধতিতে  (ওঝা দিয়ে বিষ নামানো) যাওয়া টা অনভিপ্রেত।

বিষধর সাপ (Venomous snakes)

১/ Spectacled cobra (Naja naja), binocellate cobra, পদ্ম গোখরা Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২/ Monocled cobra (Naja kaouthia), Monocellate cobra, খইয়া গোখরা Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

৩/ King cobra (Ophiophagus hannah), রাজ গোখরা, শংঙ্খচূড় Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

৪/ Common krait (Bungarus caeruleus), পাতি কাল কেউটে, শাহ কানন Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

৫/ Banded krait (Bungarus fasciatus), ডোরা কাল কেউটে, শংঙ্খিনী Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

৬/ Lesser black krait (Bungarus lividus), ছোট কাল কেউটে Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

৭/ Greater black krait (Bungarus niger), কালো কাল কেউটে Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

৮/ Wall's krait (Bungarus walli), ওয়ালের কাল কেউটে Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

৯/ Slender coral snake (Callophis melanurus), সরু প্রবাল সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১০/ Macclelland's coral snake (Sinomicrurus macclellandi), ম্যাক্লেলান্ডের প্রবাল সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১১/ Russell's viper (Daboia russelii), চন্দ্র বোড়া Viperidae পরিবারের Hemotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১২/ Saw scaled viper (Echis carinatus), ফুসরা বোড়া সাপ, বোড়া সাপ Viperidae পরিবারের Hemotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১৩/ Bamboo pit viper (Trimeresurus gramineus), বাঁশ বোড়া Viperidae পরিবারের Hemotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১৪/ Pope's pit viper (Trimeresurus popeorum), পপের সবুজ বোড়া Viperidae পরিবারের Hemotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১৫/ Spot-tailed pit viper (Trimeresurus erythrurus), দাগিলেজা সবুজ বোড়া, তিলা লেজী সবুজ বোড়া Viperidae পরিবারের Hemotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১৬/ Green pit viper (Trimeresurus albolabris), সবুজ বোড়া Viperidae পরিবারের Hemotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১৭/ Mountain pit viper (Ovophis monticola), পাহাড়ি বোড়া Viperidae পরিবারের Hemotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১৮/ Jerdon's pit viper (Protobothrops jerdonii), জার্ডনের বোড়া Viperidae পরিবারের Hemotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

১৯/ Black banded sea krait (Laticauda Laticaudata) কালো-বলয়ী সামুদ্রিক কেউটে Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২০/ Yellow-lipped sea snake (Laticauda colubrina) হলুদ-মুখো সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২১/ Hook-nosed sea snake (Enhydrina schistosa) বড়শি-নাক সামুদ্রিক সাপ Elapidae  পরিবারের  Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২২/ Daudin's sea snake (Hydrophis nigrocinctus) ডাউডিনের সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২৩/ Annulated sea snake (Hydrophis cyanocinctus) কালো-হলুদ বলয়ী সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২৪/ Estuarine sea snake (Hydrophis obscurus) মোহনা সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২৫/ Striped sea snake (Hydrophis fasciatus) ডোরা-কাটা সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২৬/ Narrow headed sea snake (Microcephalophis gracilis) সরু মাথা সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২৭/ Cantor narrow headed sea snake (Microcephalophis cantoris) ক্যান্টরের সরু মাথা সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২৮/ Malacca sea snake (Hydrophis caerulescens) মালাক্কার সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

২৯/ Malabar sea snake (Lapemis curtus) বইঠা-টেবি সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।

৩০/ Yellow-belly sea snake (Pelamis platurus) হলুদ-পেট সামুদ্রিক সাপ Elapidae পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ। 

৩১/ Large-headed sea snake (Astrotia stokesii) বড়-মাথা সামুদ্রিক সাপ Elapidae  পরিবারের Neurotoxin বিষ সমৃদ্ধ।


স্বল্পবিষধর (Mildy venomous)

৩২/ Red-necked keelback (Rhabdophis subminiatus) লাল গলা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। এই সাপটিকে স্বল্পবিষধর মনে করা হলেও এখন এই প্রজাতিকে বিপদজনক মনে করা হচ্ছে,কারন এর একটি মারাত্মক এবং কিছু নিকট মারাত্মক (Near fatal)কামড়ের খবর পাওয়া গেছে।

৩৩/ Mock viper (Psammodynastes pulverulentus) পাহাড়ি সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৩৪/ Crab-eating water snake (Fordonia leucobalia) কাকরাভূক পাইন্না সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৩৫/ Puff-faced water snake (Homalopsis buccata) মুখোসী পাইন্না সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৩৬/ Dog-faced water snake (Cerberus rynchops) কুকুর মুখো নোনা বোড়া, জল বোড়া Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৩৭/ Tawny cat snake (Boiga ochracea) খয়েরি ফণিমনসা Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৩৮/ Eyed cat snake (Boiga siamensis) চোখি ফণিমনসা Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৩৯/ Common Indian cat snake (Boiga trigonata) পাতি ফণিমনসা Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৪০/ Ornate flying snake (Chrysopelea ornata) কালনাগিনী, উড়ুক্কু সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৪১/ Dog-toothed cat snake (Boiga cynodon) বাংলার ফণিমনসা Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৪২/ Green cat snake (Boiga cyanea) সবুজ ফণিমনসা Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৪৩/ Many spotted cat snake (Boiga multomaculate) চিএিত ফণিমনসা Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৪৪/ Banded mangrove snake (Boiga dendrophila) জালি ম্যানগ্রোভ সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৪৫/ Eastern cat snake (Boiga gokool) পূবের ফণিমনসা Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৪৬/ Large-nosed vine snake (Ahaetulla nasuta) বড়-নাক লাউডগা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৪৭/ Short-nosed vine snake (Ahaetulla prasina) ছোট-নাক লাউডগা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৪৮/ Glossy marsh snake (Gerarda prevostiana) উজ্জ্বল প্যারাবন সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৪৯/ Dussumier's smooth water snake (Enhydris Dussumieri) ডুসুমিরের পাইন্না সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৫০/ Common smooth water snake (Enhydris enhydris) পানি সাপ, পাতি পাইন্না সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।


৫১/ Siebold's smooth water snake (Enhydris sieboldii) সাইবোল্ডের পাইন্না সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৫২/ Buff stripped keelback (Amphiesma stolatum) দাগি ধোরা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 


৫৩/ Yellow-bellied water snake (Hypsiscopus plumbea) হলুদ-পেট পানি সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।


বিষহীন (Non-venomous)

৫৩/ Siebold's keelback (Amphiesma sieboldii) সাইবোল্ডের মাইটা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৫৪/ Himalayan keelback (Amphiesma platyceps) হিমালয়ী মাইটা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৫৫/ Cherrapunji keelback (Amphiesma xenura) পাহাড়ি মাইটা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৫৬/ Venning's keelback (Amphiesma venningi) ভেনিং-এর মাইটা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৫৭/ Banded racer (Argyrogena fasciolata) ব্যান্ড-কাটা রেসার সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৫৮/ Olive keelback water snake (Atretium schistosum) জলপাইরঙা মাইটা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৫৯/ Blyth's reticulated (Blythia reticulata) ব্লাইদের জালি সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৬০/ Common trinket snake (Coelognathus helena monticollaris) পাতি দুধরাজ সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৬১/ Green bronzeback tree snake (Dendrelaphis cyanochloris) জলপাইরঙা বেত আঁচড়া সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৬২/ Painted bronzeback tree snake (Dendrelaphis pictus) ব্যান্ড বেত আঁচড়া সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৬৩/ Common bronzeback tree snake (Dendrelaphis tristis) বেত আঁচড়া সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৬৪/ Indian egg-eater snake (Elachistodon westermanni) দেশি ডিমখোর সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৬৫/ Lesser stripe-necked snake (Liopeltis calamaria) ছোট দাগিগলা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৬৬/ Common wolf snake (Lycodon aulicus) পাতি ঘরগিন্নি সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৬৭/ Banded wolf snake (Lycodon fasciatus) দাগি ঘরগিন্নি সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৬৮/ Twin spotted wolf snake (Lycodon jara) হলুদ-ছাপ ঘরগিন্নি সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৬৯/ Zaw's wolf snake (Lycodon zawi) জাউয়ের ঘরগিন্নি সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৭০/ Green keelback snake (Macropisthodon plumbicolor) সবুজ ধোরা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৭১/ White-barred kukri snake (Oligodon albocinctus) পাকড়া উদয় কাল সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৭২/ Banded kukri snake (Oligodon arnensis) বলয় উদয় কাল সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৭৩/ Black-barred kukri snake (Oligodon cinereus) কালো-দাগি উদয় কাল সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত।

৭৪/ Cantor's kukri snake (Oligodon cyclurus) ক্যান্টরের উদয় কাল সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৭৫/ Bangalese kukri snake (Oligodon dorsalis) বাংলার উদয় কাল সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৭৬/ Russell's kukri snake (Oligodon taeniolatis) রাসেলের উদয় কাল সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৭৭/ Mandalay kukri snake (Oligodon Theobaldi) মান্দালয় উদয় কাল সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৭৮/ Red-bamboo snake (Oreocryptophis porphyraceus) লাল বাঁশ সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৭৯/ Assam snail eater snake (Pareas monticola) আসামি শামুক-খোর সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮০/ Indo-Chinese rat snake (Ptyas korros) ইন্দো-চীনা দাড়াশ সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮১/ Indian rat snake (Ptyas mucosa) দেশি দাড়াশ সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮২/ Green rat snake (Ptyas nigromargintata) সবুজ দাড়াশ সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮৩/ Cantor's black-headed snake (Sibynophis Sagittarius) ক্যান্টরের কালো-মাথা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮৪/ Gunther's oriented slender snake (Trachischium guntheri) গুন্থারের সরু সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮৫/ Yellow-bellied worm eating snake (Trachischium tenuiceps) কমলা-পেট কীট খাদক সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮৬/ Mountain worm eating snake (Trachischium monticola) পাহাড়ি কীট খাদক সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮৭/ Painted keelback (Xenochrophis cerasogaster) চিএিত ধোরা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮৮/ Checkered keelback (Xenochrophis piscator) নক্সী ধোরা সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৮৯/ Copper-head rat snake (Coelognathus radiatus) তামাটে মাথা দাড়াশ সাপ Colubridae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৯০/ Bramini blind snake (Ramphotyphlops braminus) ব্রাক্ষনী দুমুখো সাপ Typhlopidae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৯১/ Diard's blind snake (Typhlops diardii) ডায়ার্ডের দুমুখো সাপ Typhlopidae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৯২/ Jerdon's blind snake (Typhlops jerdoni) জার্ডনের দুমুখো সাপ Typhlopidae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৯৩/ Slender worm snake (Typhlops porrectus) সরু দুমুখো সাপ Typhlopidae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৯৪/ Little wart snake (Acrochordus granulatus) ছোট আঁচিল সাপ Acrochordidae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৯৫/ Russell's sand boa (Gongylophis conicus) রাসেলের বালু বোরা Boidae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৯৬/ Burmese python (Python bivittatus) বার্মিজ অজগর Boidae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৯৭/ Indian python (Python molurus) দেশি অজগর Boidae পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। 

৯৮/ Reticulated python (Python reticulatus) জালি অজগর। 

শুক্রবার, ২৬ মে, ২০২৩

মহাশূন্যের ৩৯ কিঃমিঃ উঁচু থেকে ফেলিক্স বাউমগার্টনারের জাম্প

সম্প্রতি “অস্ট্রেলিয়ান মহাকাশ বিজ্ঞানী পৃথিবী থেকে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ফুট উঁচু থেকে লাফ দিয়ে চার মিনিট পাঁচ সেকেন্ডে পৃথিবীতে পৌঁছান” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।


মহাশূন্যের ৩৯ কিঃমিঃ উঁচু থেকে ফেলিক্স বাউমগার্টনারের জাম্প

অনুসন্ধানে দেখা যায়, পৃথিবী থেকে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ফুট উঁচু থেকে লাফ দেয়া ব্যক্তিটি অস্ট্রেলিয়ান কোনো মহাকাশ বিজ্ঞানী নয় বরং মহাকাশ থেকে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে লাফ দেওয়া ব্যক্তিটি হচ্ছেন অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার ফেলিক্স বামগার্টনার।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এনার্জি ড্রিঙ্ক রেডবুলের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ২০১২ সালে প্রচারিত Red Bull Stratos – World Record Freefall শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

 


ভিডিওটিতে উল্লেখ করা হয় যিনি স্ট্রাটোস্ফিয়ার (বায়ুমন্ডলের দ্বিতীয় স্তর, এই স্তর ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কি.মি. উচ্চতায় শুরু হয়ে ৫০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত) থেকে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে লাফ দিয়েছিলেন তার নাম হচ্ছে ফেলিক্স বামগার্টনার। তিনি স্ট্রাটোস্ফিয়ার থেকে লাফিয়ে ঘন্টায় আনুমানিক ১৫৭.৬ কিলোমিটার বা ৮৪৩.৬ মাইল গতিতে পৃথিবীতে পৌঁছেছেন। এমন ঘটনার মাধ্যমে তিনি গিনেজ বুকে রেকর্ড স্থাপন করেছিলেন।


পরবর্তীতে কী- ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Guinness World Records এর ওয়েবসাইটে Felix Baumgartner: First person to break sound barrier in free শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।


প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয় ফেলিক্স বামগার্টনার হচ্ছেন একজন অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার।  ফেলিক্স বামগার্টনার ৩৮,৯৬৯.৪ মিটার বা ১২৭৮৫২.৩৬ফুট উচ্চতা থেকে প্যারাসুট জাম্প করে পৃথিবীতে পৌঁছেছিলেন।


এছাড়াও, CNN এর ওয়েবসাইটে ২০১২ সালের ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত ‘Goosebumps’ as daredevil jumps from edge of space শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয় ফেলিক্স বামগার্টনার অস্ট্রিয়ার একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি থেকে স্ট্রাটোস্ফিয়ার থেকে প্যারাসুট জাম্প করে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে লাফ দেন। বামগার্টনার একটি স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক বেলুনে  ১২৭৮৫২.৩৬ফুট উপরে উঠেছিলেন এবং একটি ফ্রিফল জাম্প সম্পন্ন করেছিলেন। যা তাকে মাটিতে নিরাপদে প্যারাশুটিং করার আগে সুপারসনিক গতিতে পৃথিবীর দিকে ছুটে যেতে সাহায্য করেছিল।


মূলত, ২০১২ সালে অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার ফেলিক্স বামগার্টনার স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক বেলুনে ১ লক্ষ ২৭ হাজার ফুট উপরে উঠে একটি ফ্রিফল জাম্প সম্পন্ন করেছিলেন। যা তাকে মাটিতে নিরাপদে প্যারাশুটিং করার আগে সুপারসনিক গতিতে পৃথিবীর দিকে ছুটে যেতে সাহায্য করেছিল। অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার ফেলিক্স বামগার্টনারের করা এই ফ্রি ফল জাম্পকেই অস্ট্রেলিয়ান মহাকাশ বিজ্ঞানীর করা ফ্রি ফল জাম্প দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রেড বুল সারা বিশ্বের মানুষের কাছ থেকে তাদের প্রতি আরও মনোযোগ আকর্ষণ করতে এবং বিশ্বব্যাপী মিডিয়াগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে “রেড বুল স্ট্রাটোস” ছিলো একটি পাবলিসিটি স্টান্ট।

সুতরাং, অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার ফেলিক্স বামগার্টনারের ফ্রি ফল জাম্পের ভিডিওকে অস্ট্রেলিয়ান মহাকাশ বিজ্ঞানীর লাফ দেওয়ার ভিডিও দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।


তথ্যসূত্র:

Red Bull- YouTube : Red Bull Stratos – World Record Freefall

Guinness World Records: Felix Baumgartner: First person to break sound barrier in free

ESPN: Baumgartner makes record freefall

The Guardian: Felix Baumgartner on cancelled space jump: ‘there’s no way’ he’ll give up 

CNN: ‘Goosebumps’ as daredevil jumps from edge of space 

Forbes:Felix Baumgartner’s Jump Proves the Power of Publicity Stunts

শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩

বাংলার নীলনদ খ্যাত সিলেটের ‘লালাখাল’

  

বাংলার নীলনদ খ্যাত সিলেটের ‘লালাখাল’



বাংলার নীলনদ খ্যাত সিলেটের ‘লালাখাল’

সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে জৈন্তাপুর উপজেলায় স্বচ্ছ নীল পানির নদী ‘লালাখাল’। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি। প্রকৃতিকে একান্তে অনুভব করার জন্য স্থানটি বেশ উপযোগী। পাহাড়ে ঘন সবুজ বন, নদী, চা-বাগান ও নানা জাতের বৃক্ষের সমাহার লালাখালজুড়ে। পানি আর প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়া এখানকার মানুষের জীবনযাত্রাও আপনাকে দেবে নতুন করে বাঁচার প্রেরণা। লালাখালে গেলে আদিবাসীদের সঙ্গে আপনার সখ্যের সুযোগও থাকছে! সবকিছু মিলিয়ে এলাকাটি পর্যটকদের কাছে বেশ প্রিয়, কাঙ্ক্ষিত ও প্রতীক্ষিত একটি স্থান।

সড়কপথ, নৌপথ দুভাবেই যাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও নৌ ভ্রমণটা বেশি উপভোগ্য বলে এটাকেই বেছে নেয় অধিকাংশ পর্যটক। নৌপথে যেতে যেতে যেদিকে চোখ যায়, মুগ্ধতায় নেমে আসে মগ্নতা! নিশ্চিতভাবে কিছুক্ষণের জন্য আপনি কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যেতে চলছেন, এ খেয়াল হবেই না! ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। লালাখাল ভ্রমণের জন্য শীতের প্রথম ভাগটাই উপযুক্ত সময়। চাইলে বৃষ্টির দিনে ভ্রমণ করা যেতে পারে। তবে শীতের সময়টা বেশ নিরাপদ।

বলে নেওয়া ভালো, চাইলে সারা দিন লালাখালে কাটাতে পারেন, আবার দিনের শেষ ভাগটা কাটিয়ে আসতে পারেন। সারা দিনের জন্য গেলে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় ফিরলে দুই ধরনের আনন্দ পাওয়া যায়। লালাখালের চারপাশে সন্ধ্যার আগমুহূর্তটা আরো অবিস্মরণীয়। ওপরে আলোকিত আকাশ। ক্লান্ত সূর্য ঢলে পড়ছে পশ্চিম আকাশে। চারপাশে গাছপালার মধ্যে পাখির কিচিরমিচির।

এসব দেখলে মনে হয়, পাহাড় থেকে তিরতির সন্ধ্যা নেমে আসছে। ধীরে ধীরে গোধূলিকেও আঁধার ঢেকে দেয়। ক্রমে চারপাশে নেমে আসে আঁধার। সন্ধ্যার আঁধার নেমে আসে লালাখালের স্বচ্ছ নীল জলে। সঙ্গে জ্যোৎস্না রাতে নৌকায় লালাখাল পাড়ি দেওয়ার মজাই আলাদা। তবে সতর্ক থাকতে হবে। আপনি চাইলে আগেভাগে বুকিং দিয়ে রাত কাটাতে পারবেন লালাখালের পাশে সদ্য গড়ে ওঠা একমাত্র রিসোর্টে। রিসোর্টের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাও আছে। স্পিডবোটে লালাখালের নীল জল চিরে এগিয়ে যাওয়াটা আপনার আনন্দ বাড়িয়ে দেবে।

সিলেট থেকে সড়কপথে সিলেট-তামাবিল সড়কে সারিঘাট এসে তার পর এক থেকে দেড় ঘণ্টার নৌ ভ্রমণ। ইঞ্জিনচালিত নৌযানের গতির ওপরে সেটা নির্ভর করে। সিলেট থেকে এলে সারিঘাট থেকে নৌকা ভাসাতে হয়। সারিঘাটে নামলেই যে কারোর মনটা হালকা হয়ে আসবে। পাথরের ঢাল আর খালের স্বচ্ছ নীল জল দেখতে যে কারো ভালো লাগবে।

সারিঘাট থেকে প্রতি ঘণ্টায় নৌকা ছেড়ে যায়। স্থানীয়রা নৌকায় যাতায়াত করেন। খালের যেখানে শুরু, সেখানেই রয়েছে সুন্দর এক চা বাগানসহ ফ্যাক্টরি। বাগানটিও খুব পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর। পাশে পাড়ার ছেলেদের খেলার ফুটবল মাঠে চাইলে জমিয়ে ফুটবল খেলে নিতে পারেন, যদি প্রস্তুতি থাকে। ওখানেই চাইলে ঘুরে আসা যাবে আদিবাসীদের পল্লী। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ আপনাকে নিয়ে যাবে অচেনা এক দেশে। একটু এগোলেই ওপারে ভারতের সীমান্ত আপনাকে জানিয়ে দেবে, আর এগোনোর পথ নেই।

লালাখালের দুই পাড়ে তেমন কোনো বাড়িঘর নেই; কিন্তু আছে হরেক রকমের গাছপালা। যেন চারপাশে সবুজের হাতছানি। মাঝেমধ্যে কাশবনের ঝোপ চোখে পড়ে। তবে নদীতে অসংখ্য বাঁকের দেখা মেলে। প্রতিটি বাঁকই দেখার মতো সুন্দর। নদী থেকে দূরে পাহাড় দেখা যায়। দেখলে যতটা কাছে মনে হয়, আসলে তত কাছে না। পাহাড়গুলোকে দেখলে মনে হয়, কেউ যেন নিজ হাতে থরেথরে একের পর একটি করে সাজিয়ে রেখেছে। এখানে পাহাড়ের গায়ে মেঘ জমা হয়। একটু কাছ থেকে দেখা যায়, মেঘেরা দল বেঁধে পাহাড়ের গায়ে ঠেস লাগিয়ে থেমে থাকে। আবার কখনো দুই পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে সবার অলক্ষ্যে হারিয়ে যায়। কখনো মেঘ বেশি জমা হলে এখানে বৃষ্টিপাত বেড়ে যায়। নদী আর পাহাড় মেলবন্ধনে নদীর টলটলে স্রোতস্বিনী জল আর পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা ঝর্ণাধারা, এ যেন প্রকৃতির এক মায়াময়ী রূপের বাহানা। নদীর জলে নৌকার ওপর বসে পাহাড় দেখার সৌর্ন্দযই আলাদা। দল বেঁধে এখানে এলে সুবিধা বেশি, কারণ নৌকা ভাড়াটা কমে যায়। ভ্রমণে আনন্দও উপভোগ করা যায় এবং সবাই মিলে হৈচৈ করে আনন্দ ভাগাভাগি করা যায়।

জায়গাটার নামের সঙ্গে ‘খাল’ শব্দ যুক্ত হলেও এটা মূলত একটা নদীরই অংশ। নদীর নাম সারি। পানি স্থির নয়, সব সময় চলমান। কেননা, চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে বেয়ে আসা পানি গড়িয়ে চলেছে লালাখাল দিয়ে। নদীতে স্রোত থাকায় যাওয়ার পথে সময় বেশি লাগে, তেমনি ফিরতি পথে পাওয়া যায় বাড়তি সুবিধা।

এ নদীর পানি নীল, কিন্তু নাম কেন লালাখাল হলো? এমন প্রশ্ন অনেকের। লালাখালকে কেন লালাখাল বলা হয়, তা জানা যায়নি। স্থানীয়দের কাছ থেকেও এর কোনো ব্যাখ্যা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। নদীর পানি নীল কেন, বলা মুশকিল। প্রকৃতিতেই এ নদীর পানি নীল। তাই নদীর পানি নিয়ে যে কারো মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। হতে পারত নীলাখাল। মিসরের নীল নদ দেখা সবার ভাগ্যে নাও জুটতে পারে। তবে দেশের এ খাল দেখে নীল জলারাশি দেখার আক্ষেপ মিটতে পারে। কেউ বা আবার নীল নদ দেখতে উদগ্রীবও হতে পারেন। ভ্রমণ শেষে আপনার মনে হতে পারে, এটা সিলেটের নীল নদ বা বাংলার নীল নদ।

থাকার জায়গা : এতক্ষণে আপনার মন চাইছে ঘুরতে আসতে লালাখাল। সঙ্গে যদি অনুসঙ্গ যোগ হয়? আপনি চাইলে পারবেন লালাখালের পাড়ে রাত কাটাতে। আগে সুবিধাটা ছিল না। এখনো যে খুব বেশি, তা বলা যাবে না। একটা মাত্র রিসোর্ট। আগে থেকে বুকিং দিয়েই আসতে হয়। না হলে জায়গা পাওয়া কষ্ট। নর্দার্ন রিসোর্ট নামে রিসোর্টটির নিজেদের পরিবহন ব্যবস্থাও আছে। এ ছাড়া সিলেট শহরে রাত যাপন করে একদিনে মাত্র লালাখাল ঘুরতে পারেন। অথবা বিছনাকান্দি ও জাফলং যেকোনো একটার সঙ্গে মিলিয়ে বিকেলের ভ্রমণটা লালাখালে হতে পারে। সিলেট শহর থেকে বেশ দূর হওয়ায় সন্ধ্যার দিকে নদীতে কোনো নৌকা থাকে না। তাই ভ্রমণ বা ঘোরাঘুরি সন্ধ্যার মধ্যেই শেষ করতে হয়। সবচেয়ে ভালো হয় নৌকা ভাড়া নিয়ে যাতায়াত করলে।

যেভাবে যাবেন : লালাখালে যেতে হলে সিলেটের শিশু পার্কের সামনে থেকে লেগুনা অথবা জাফলংয়ের বাসে চেপে সিলেট-তামাবিল সড়ক ধরে যেতে হবে সারিঘাট। সিলেট আর জাফলং মাঝামাঝি এ স্থানটির নাম সারিঘাট। আগেই বলা হয়েছে, যাওয়ার জন্য পথ দুটি সড়কপথ ও নৌপথ। সড়ক পথে যেতে চাইলে মাইক্রোবাস বা কার ভাড়া নিলে ভালো হয়। তা ছাড়া সিলেট শহর থেকে বাস, লেগুনায় সারিঘাট গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া নিতে পারেন। নৌপথে যেতে চাইলে আগে সারিঘাট পর্যন্ত একই নিয়মে বাস, লেগুনায় গিয়ে নৌযান ভাড়া নিতে হবে। ফেরার পথে এখান থেকে বাসে কিংবা লেগুনায় আসতে পারবেন। রাত ৮টা নাগাদ যানবাহন পাওয়া যাবে।

খরচ : সড়কপথে যেতে বেশি লোক হলে মাইক্রো ভাড়া নিলে ভালো। খরচটা কম হবে। সিলেট শহর থেকে শুধু লালাখালের জন্য মাইক্রোর ভাড়া দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে হবে, কার নিলে ভাড়া এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে। সারা দিনের প্ল্যান হলে ভোরে সিলেট থেকে রওনা দিতে হবে। তা ছাড়া বাস কিংবা লেগুনায় ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে সারিঘাট যেতে পারবেন। সেখানে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া ৮০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা আর স্পিডবোটে যেতে চাইলে ভাড়া এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা কম হতে পারে। নৌযানে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে, ভাড়া একই।

বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩

প্রথমবারের মতো দেখা গেল পানির নিচে সম্পূর্ণ টাইটানিক। টাইটানিকের বিরল ছবি



টাইটানিক জাহাজের বিরল ছবি প্রকাশ 

প্রথমবারের মতো দেখা গেল পানির নিচে সম্পূর্ণ টাইটানিক।

বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত জাহাজডুবির ঘটনা, টাইটানিকের এমন কিছু ছবি প্রকাশ পেয়েছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি। প্রথমবারের মত টাইটানিকের পূর্ণ আকারের ডিজিটাল স্ক্যান এই ছবিগুলো। যা গভীর-সমুদ্র ম্যাপিং পদ্ধতি ব্যবহার করে আটলান্টিকের ৩৮০০ মিটার (১২০০০ ফুট) পানির নিচে অবস্থিত টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের একটি পূ্র্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরেছে। ক্যামেরায় তোলা ৭ লক্ষ ছবির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে এই ছবিগুলো।




ছবিগুলো পুরো জাহাজের একটি অসাধারণ থ্রিডি ভিউ তুলে ধরেছে। মনে হচ্ছে যেন জাহাজটির ধ্বংসাবশেষের চারপাশ থেকে সব পানি নিষ্কাশন করে ফেলা হয়েছে।


বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, ১৯১২ সালে ডুবে যাওয়া এই জাহাজটির সাথে ঠিক কি ঘটেছিল তা জানতে নতুন একটি সুযোগ তৈরি করতে পারে এই ছবিগুলো।


ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক যাওয়ার উদ্দেশে প্রথমবারের মত সমূদ্রে যাত্রা করে জাহাজটি। সেই প্রথম যাত্রায় জাহাজটি একটি বিশাল আইসবার্গের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এ ঘটনায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।




১৯৮৫ সালে ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে টাইটানিককে ঘিরে ব্যাপক অনুসন্ধান হয়েছে।কিন্তু জাহাজটি এতটাই বিশাল যে- পানির নিচে গভীর অন্ধকারে, ক্যামেরাগুলি কেবল ক্ষয়িষ্ণু জাহাজের কিছু স্ন্যাপশট দেখাতে পারে, পুরো জাহাজটি কখনোই দেখাতে পারেনি।


নতুন প্রকাশিত এই ডিজিটাল স্ক্যানটি ধ্বংসাবশেষের একটি পরিপূর্ণ দৃশ্য তুলে ধরেছে। জাহাজটি দুটি অংশে ভাগ হয়ে সমূদ্রতলে পড়ে আছে। ভাঙা জাহাজটিকে ঘিরে রয়েছে বিশাল ধ্বংসস্তূপ।




স্ক্যানটি ২০২২ সালের গ্রীষ্মে ম্যাগেলান লিমিটেড নামের একটি গভীর-সমুদ্র ম্যাপিং কোম্পানি এবং আটলান্টিক প্রোডাকশন কোম্পানি মিলে তৈরি করেছে। একইসাথে তারা প্রকল্পটি সম্পর্কে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করছে।


টাইটানিকের এই ডিজিটাল স্ক্যান তৈরি করতে তাদের সময় লেগেছে ২০০ ঘণ্টারও বেশি। তারা টাইটানিকের প্রতিটি কোণ থেকে ছবি তুলেছে। প্রায় ৭ লক্ষ ছবির সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে টাইটানিকের এই ডিজিটাল ছবিটি।




এই অভিযানের পরিকল্পনা এবং নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ম্যাগেলানের গেরহার্ড সিফার্ট। তিনি জানান, এটি তার হাতে নেওয়া সবচেয়ে বড় আন্ডারওয়াটার স্ক্যানিং প্রকল্প।  টাইটানিক যেখানে আছে, মহাসাগরের সেই স্থানটির গভীরতা প্রায় ৪ হাজার মিটার।  এটি তাদের কাজের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।  তীব্র স্রোতও জয় করতে হয়েছে তাদের।  তিনি বলেন, আমরা জাহাজের কোনও কিছু স্পর্শ করিনি, যাতে ধ্বংসাবশেষের ক্ষতি না হয়।




তিনি আরও বলেন, আরেকটি চ্যালেঞ্জ ছিল- প্রতি বর্গসেন্টিমিটারের মানচিত্র তৈরি করা।  তা না হলে পুরো জাহাজের চিত্র তুলে ধরা সম্ভব ছিলনা।  কিছু কিছু স্থানে ধ্বংসাবশেষ কাদামাটিতে ডুবে ছিল।  সেগুলো স্ক্যান করা ছিল খুব কঠিন।


হারিয়ে যাওয়ার ১০০ বছর পরেও জাহাজটির বডি অনেকটা ভালো আছে। এখনও তাত্ক্ষণিকভাবে দেখে চেনা যায়- এটাই টাইটানিক।




বহু বছর ধরে টাইটানিক নিয়ে গবেষণা করা পার্ক স্টিফেনসন জানান, তিনি প্রথম যখন স্ক্যানগুলো দেখেছিলেন, তখন বিস্মিত হয়েছিলেন।


তিনি বলেন, স্ক্যান করে তৈরি করা টাইটানিকের অবস্থা দেখে আপনি ধ্বংসাবশেষ সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে ধারণা পাবেন। নতুন এই স্ক্যানে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে পাবেন জাহাজটি।  ধ্বংসাবশেষের একদম আসল অবস্থা দেখতে পাওয়া যাবে এখানে।




পার্ক স্টিফেনসন আরও বলেন, স্ক্যানগুলো রিসার্চ করে ১৯১২ সালের সেই ভয়ানক রাতে টাইটানিকের সঙ্গে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে নতুন ধারণা পাওয়া যেতে পারে।  আমরা সত্যিই হিমশৈলের সঙ্গে জাহাজের সংঘর্ষের ধারণাটি বুঝতে পারি না।  জাহাজটি কীভাবে সমুদ্রের তলদেশে আঘাত হানে, সেটিও এখন গবেষণা করা যেতে পারে।


https:///facebook.com/aliahmedunofficial
https://aliahmedonline.wordpress.com

শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩

ফিফা বনাম আইসিসি, বছরে কার কত আয়

 


ফিফা ও আইসিসি সদর দপ্তরের ছবি

পৃথিবীতে জাতিসংঘ স্বীকৃত দেশ আছে ১৯৩টি। আর ফুটবলের বৈশ্বিক সংস্থা ফিফার সদস্যসংখ্যা ২১১।

রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত দেশের তুলনায় ফিফার সদস্যসংখ্যার আধিক্যই বলে দিচ্ছে ফুটবলের দুনিয়াটা কত বড়। ফুটবলই যে বিশ্বের জনপ্রিয়তম খেলা, তা নিয়ে তাই দ্বিধা নেই কারোরই। বিভিন্ন তথ্য–উপাত্ত বলছে, ফুটবলের পরের জায়গাটি ক্রিকেটেরই। খেলাটি প্রবল জনপ্রিয়—এমন অঞ্চলের জনসংখ্যা এবং বিশ্বকাপের দর্শকসংখ্যার বিচারে ক্রিকেটকে বিশ্বের দ্বিতীয় জনপ্রিয় খেলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিশ্বজুড়ে ফুটবলের মূল অভিভাবক ফিফা (ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন), আর ক্রিকেটের অভিভাবক আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল)। দুটি সংস্থার জন্ম কাছাকাছি সময়ে। ফিফার প্রতিষ্ঠা ১৯০৪ সালে, প্যারিসে। আইসিসির যাত্রা ১৯০৯ সালে, লন্ডনে। বর্তমানে দুটিরই প্রধান কার্যালয় অন্যত্র। ফিফার সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জুরিখে, আইসিসির প্রধান কার্যালয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে।

দুই বৈশ্বিক কর্তৃপক্ষের মধ্যে ফিফা যে আইসিসির চেয়ে ধনী—এ কথা সহজেই বোধগম্য। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে ফুটবল চলে, খেলাধুলা অঙ্গনে সবচেয়ে বেশি অর্থের ছড়াছড়ি এই খেলাকে কেন্দ্র করে। তুলনায় ক্রিকেটের দুনিয়া অনেকটাই সীমিত।

জুরিখে অবস্থিত ফিফা সদর দপ্তর
এএফপি

ব্রিটিশ উপনিবেশে থাকা দলগুলো, আরও স্পষ্ট করে বললে কমনওয়েলথের সদস্যদেশগুলোতেই ক্রিকেটের বিস্তৃতি বেশি। তবে দক্ষিণ এশিয়ার মতো বিশ্বের জনবহুল এলাকায় জনপ্রিয় বলে ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতিও কম নয়। সাম্প্রতিক সময়ে টি–টোয়েন্টির সুবাদে আইসিসির মোট সদস্য সংখ্যা ১০৮–এ পৌঁছে যাওয়ায় ক্রিকেটও হাঁটছে বিশ্বায়ন, একই সঙ্গে আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি আয়ের পথে।
এবার দেখা যাক, ফুটবল ও ক্রিকেটের দুটি বৈশ্বিক সংস্থা কে কেমন আয় করে?

ফিফা ও আইসিসি কেমন আয় করে

দুটি সংস্থারই আয়ের উৎস একই ধরনের। যার বেশির ভাগই আসে সম্প্রচার স্বত্ব থেকে। এ ছাড়া বিপণন স্বত্ব, টিকিট বিক্রি, টুর্নামেন্ট আয়োজন, সনদ স্বত্ব—এসব থেকে আয় করে থাকে ফিফা ও আইসিসি। দুটি সংস্থাই আয়-ব্যয়ের চূড়ান্ত হিসাব করে থাকে দীর্ঘ মেয়াদে। মূলত অন্যান্য বছরের তুলনায় বিশ্বকাপের বছরে আয় বেশি হয় বলে একসঙ্গে কয়েক বছরের হিসাবকে বিবেচনায় নেওয়া হয়।


দুবাইয়ে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ভবন
আইসিসি

আইসিসি বর্তমানে আট বছরের চক্রে আছে, যা শেষ হবে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের মাধ্যমে। ইতিমধ্যে ২০২৪ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত পরবর্তী চার বছরের আয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে। ফিফায় চার বছরের হিসাব সম্পন্ন করা হয়েছে ২০২২ বিশ্বকাপের মাধ্যমে। এখন চলছে ২০২৩-২৬ চক্র।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ফিফা কাউন্সিলে ২০২২ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯-২২ চক্রে ফিফা ৭৫৬ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার আয় করেছে। এর মধ্যে টেলিভিশন সম্প্রচার স্বত্ব বাবদ আয় হয়েছে ৩৪২ কোটি ৬০ লাখ ডলার।