শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩

গুগল এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৩

গুগল এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম : গুগল এডসেন্স একাউন্ট কিভাবে ওয়েবসাইটের জন্য তৈরি করতে হয় সেই বিষয়ে আমরা আজ আপনাকে জানাবো।

বর্তমানে আমাদের মধ্যে অনেক লোক আছে যারা গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে প্রতি মাসে প্রচুর পরিমাণে টাকা আয় করে যাচ্ছে। আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে তবে আপনি সেখানে এডসেন্স একাউন্ট খুলে আয় করা শুরু করতে পারবেন।

যারা বিভিন্ন ধরনের ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করার চেষ্টা করে থাকেন তারা একজন ব্লগার হিসেবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরী করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যদি ব্লগ বা ওয়েবসাইট ভালো পরিমান ভিজিটর দিয়ে চালাতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।

কারণ প্রতিটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট গুলো ইনকাম করার মাধ্যম হচ্ছে ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে অতিরিক্ত মাসিক হওয়ার ফলে আপনার ওয়েবসাইটে ইনকাম তত বেশি বৃদ্ধি পাবে।




আপনি যখন দেখবেন আপনার ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমানের ভিজিটর আছে সেক্ষেত্রে আপনি গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট খুলে নেবেন। আমরা জানি বর্তমান সময়ে গুগল এডসেন্স এর জন্য এত সহজ ব্যাপার নয়।

গুগল এডসেন্স পেতে গেলে অনেক শ্রম দিতে হয় আপনার ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত আর্টিকেল লিখতে হয় এবং আপনার আর্টিকেলটি ভিজিটরদের দেখাতে হয় আপনি ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের ডেভলপমেন্ট আছে সেগুলো যদি সঠিকভাবে উন্নত করতে পারেন তাহলে আপনি গুগোল অ্যাডসেন্সে আবেদন করে অনুমোদন পেয়ে যাবেন।

আপনি যখন গুগোল অ্যাডসেন্সে আবেদন করবেন তারপর তারা আপনার ওয়েবসাইটটি রিভিউ করে যদি ভালো মনে করে তাহলে আপনার ওয়েবসাইটটিকে অ্যাপ্রভাল দিয়ে দিবে যখন আপনাকে গুগল এডসেন্স বিজ্ঞাপনের জন্য অনুমোদন দিয়ে দিবে তখন আপনার এডসেন্স একাউন্ট থেকে আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন গুলো সেট করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন খুব সহজেই।

গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করার জন্য কি প্রয়োজন

আপনি যদি গুগল এডসেন্স আপনার ওয়েবসাইটে খুলতে চান তাহলে আপনাকে সেই বিষয়ে কিছু জিনিস প্রয়োজন হবে। গুগোল অ্যাডসেন্সে একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।

আপনি যে ওয়েবসাইটটি তৈরি করেছেন সেটি গুগল এডসেন্স এর শর্ত অনুযায়ী হতে হবে যদি তাদের শর্ত নতে আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে না পারেন তবে অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে যাবে।

আপনি যদি গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলতে চান তবে আপনাকে যে জিনিস গুলো প্রয়োজন হবে সেগুলো হচ্ছে-

একটি জিমেইল আইডি- আপনি যখন কোন ওয়েবসাইটের জন্য গুগল এডসেন্স এ আবেদন করবেন তখন একটি গুগল আইডি যেটা দিয়ে আপনি গুগল এডসেন্স বানাবেন।

তারপর আপনার মোবাইল নাম্বার- আপনি যে মোবাইল নাম্বার দিয়ে আপনার একাউন্টি ভেরিফাই করবেন সেই মোবাইল নাম্বারটি দিতে হবে।

তারপর আপনি গুগোল অ্যাডসেন্সে যে ঠিকানাটা দিবেন সেই ঠিকানা অনুযায়ী আপনাকে একটি ভেরিফিকেশন চিঠি প্রদান করা হবে।

তারপর আপনার প্রয়োজন হবে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল যেখানে আপনারা বিজ্ঞাপন দেখে ইনকাম করবেন।

আপনি যদি উক্ত জিনিস গুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে পারেন তাহলে আপনি গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

গুগোল অ্যাডসেন্সে আবেদন করতে হয় ?

আপনি যদি একটি ওয়েবসাইটের জন্য গুগল এডসেন্স আবেদন করেন তাহলে আপনাকে বিশেষ কিছু কাজ করতে হবে প্রথমে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে সেখানে সুন্দর করে ডিজাইন দিতে হবে তারপর কোয়ালিটি সম্পন্ন 1000 থেকে 15 ওয়াটের আর্টিকেল লিখতে হবে এবং আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন সেখানে পেজ তৈরি করতে হবে।

আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি আপনি যখন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন তখন সে ওয়েবসাইটে কম করে হলেও 3 থেকে 6 মাস ধরে আর্টিকেল লিখবেন নিয়ম অনুযায়ী।

আপনি যখন আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটে 30 থেকে 40 টি আর্টিকেল লিখবেন তখন আপনি শেয়ার দিলে কম করে হলেও 1000 টাকা পনেরশো ওয়াট লিখবেন তারপর আপনার ওয়েবসাইটে যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে দৈনিক 1000 থেকে 2000 ভিজিটর আসবে তখন আপনি গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আপনি যদি সঠিকভাবে পূরণ করতে পারেন তাহলে গুগোল অ্যাডসেন্সে আবেদন করার সুযোগ পেয়ে যাবেন। আর এই শর্তগুলো পূরণ করার পর আপনি অল্প সময়ের মধ্যে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পেয়ে যাবেন। আমরা জানি বর্তমানে গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রভাল পেলে এটাকে বলা হয় সোনার হরিণ।

কিভাবে গুগল অ্যাডসেন্স একাউন্ট খুলবেন ?

আপনি যদি ওয়েবসাইটের জন্য গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলতে চান? তাহলে কিছু বিষয়ে আপনাকে জানতে হবে। কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করবেন নিজামী গান তৈরি করার সহজ নিয়ম প্রস্তুত করেছি তবে মনে রাখবেন একান তৈরি করার সময় কোন ধরনের ভুল তথ্য যুক্ত করবেন না।

আপনি যদি গুগোল অ্যাডসেন্সে আবেদন করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই নিজের নাম ঠিকানা মোবাইল নাম্বার ইত্যাদি সকল তথ্য যুক্ত করতে হবে কারণ ভবিষ্যতে সবকিছু ভেরিফাই করা হবে সম্পূর্ণভাবে আচ্ছা অ্যাকাউন্ট তৈরি করার তিনটি ভাগ রয়েছে যেমন-

  • Sign up for AdSense
  • Add AdSense ad code to your blog
  • Wait for account review process

আমরা আপনাকে যে তিনটি ভাগ দেখিয়েছি এই তিনটি বিষয়ে আপনাকে সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে এই তিনটিকে কাজে লাগিয়ে আপনি গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলতে পারবেন।


বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

রেললাইনের নিচে ব্যবহৃত এগুলা আসলে কি?

রেললাইনের নিচে ব্যবহৃত এগুলা আসলে কি?



Ans: এক্সেল ডিটেক্টর সেন্সর

রেললাইনের প্রতি ৩ থেকে ৫ কিলোমিটারের নির্দিষ্ট একটি দূরত্বে দেখতে পাওয়া যায় অ্যালুমিনিয়ামের এই বক্সটিকে। এটি আসলে যাত্রী সুরক্ষার কাজেই ব্যবহৃত হয়। রেলের ভাষায় এটিকে “অ্যাক্সেল কাউন্টার বক্স” বলা হয়।


যদি কোনো ট্রেন কোনো দুর্ঘটনার স্বীকার হয় আর সেই কারণে সেই ট্রেনের কিছু বগি বা কোচ ট্রেন থেকে আলাদা হয়ে যায় তখন এক্সেল কাউন্টার (Axle counter box) বলে দেয় যে কতগুলি চাকা বা বগি মিসিং রয়েছে। আর এর ফলে রেল কর্তৃপক্ষের বুঝতে সুবিধা হয় কটা বগি মিসিং রয়েছে ও কোন এলাকায় সেই বগি গুলি ট্রেন থেকে আলাদা হয়েছিল। আর এর ফলে দুর্ঘটনার পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তদন্ত করতে সুবিধা হয়।


রেল লাইনের ধারে থাকা এই এক্সেল কাউন্টার বক্স একটি ট্রেন পাস করার পর ট্রেনের এক্সেলকে কাউন্ট করে নেয় এবং পরবর্তী কাউন্টার বক্সকে সেই ইনফরমেশন দিয়ে দেয় ও সেই কাউন্টার বক্সটিও আবার একইরকম করে কাজ করে। কিন্তু যদি এক কাউন্টার বক্সের সাথে যদি আগামী কাউন্টার বক্সের ক্যালকুলেশন ম্যাচ না করে তখন আগামী এক্সেল কাউন্টার বক্স ট্রেন থামানোর জন্য সিগ্নালকে রেড করে দেয়।

রেল লাইনে পাথর দেয় কেনো?

রেল লাইনের উপর দিয়ে রেল চলাচলের সময় পুনপুন পীড়নের সৃষ্টি হয়। এই পীড়ন কে রেজিস্ট করা, বৃষ্টির পানি যাতে লাইনে জমে না থাকে, স্লিপার কে সঠিক অবস্থানে ধরে রাখার জন্য, মাটির তুলনায় পাথরের চাপ পীড়ন বহন করার ক্ষমতা বেশি, ইদুর বা অন্য কোনো কীটপতঙ্গ যাতে গর্ত না করতে পারে, ব্যালাস্ট একটি নির্দিষ্ট গভীরতা পর্যন্ত দেওয়া হয়।

পৃথিবী ঘোরে নাকি সূর্য?

 পৃথিবী ৩৬৫.২৫ দিন পর পর সূর্যকে একবার করে প্রদক্ষিণ করে। তবে এতে করে পৃথিবী কখনোই তার পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে পারেনা। কারণ সূর্য নামের তারাটি নিজের জায়গাতে চুপচাপ বসে থাকেনা। আমাদের এই গ্যালাক্সিতে থাকা কয়েক হাজার কোটি তারাদের মতো সূর্যও গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থিত ব্ল্যাকহোলকে প্রদক্ষিণ করা নিয়ে সবসময় ব্যস্ত। 


সূর্যের একটা বছর হতে সময় লাগে আমাদের পৃথিবীর সময়ের হিশেবে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন বছর। আর সেইজন্য সূর্যকে প্রতিটা সেকেন্ডে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার করে পথ পাড়ি দিতে হয়। ফলে আমাদের পৃথিবী সূর্যকে ৩৬৫.২৫ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করলেও সূর্য প্রতিটা মুহূর্তেই পৃথিবীকে টেনে তার সাথে করে অনেকদূর নিয়ে যায়। 


এই লেখাটা পড়তে পড়তেই হয়তো আমরা সূর্যের সাথে সাথে ৩০ লক্ষ মিটার সামনে এগিয়ে গেছি। ঠিক এই মুহূর্তে আমরা এখন যেখানে অবস্থান করছি, আর কখনোই সেখানে আমরা ফিরে আসতে পারবো না! 




আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান বলছে মহাবিশ্বের পৃথিবীতে প্রতিটা বছর নতুন। প্রতিটা দিন নতুন। প্রতিটা সেকেন্ড, এমনকি প্রতিটা মুহূর্তই নতুন। প্রায় নয়টা বছর হতে চলছে থার্টিফাস্ট উদযাপন আমি করিনা। তবে সমর্থন করি। মানব জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই আনন্দের সাথে উদযাপন করা উচিৎ। প্রতিটা জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই কাটুক আনন্দ ও উল্লাসের সাথে। 

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২

নিউটনের সূত্রসমূহ। Newton's Laws

নিউটনের সূত্র সমূহ। Newton's Laws


নিউটনের সূত্র কয়টি ও কি কি বিস্তারিত আলোচনা


নিউটনের তিনটি সূত্র। নিউটনের ১ম ২য় ৩য় সূত্র গুলি হলো যথাক্রমে -


 1️⃣ নিউটনের প্রথম সূত্র: বাইরে থেকে প্রযুক্ত বল দ্বারা অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে বাধ্য না করলে, স্থির বস্তু চিরকাল স্থির অবস্থায় থাকবে এবং সচল বস্তু চিরকাল সমবেগে একই সরলরেখায় চলতে থাকবে।


 2️⃣নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র: কোন বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার বস্তুর উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে প্রযুক্ত হয়, ভরবেগের পরিবর্তনও সেদিকে ঘটে।


 3️⃣নিউটনের তৃতীয় সূত্র: প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।


নিউটনের প্রথম গতি সূত্র


নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে কি জানা যায় : নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে আমরা যে দুটি বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাই তা হলো – (a) পদার্থের জাড্য এবং (b) বলের সংজ্ঞা।


জাড্য কাকে বলে? জাড্য কয় প্রকার ও কি কি?


জাড্য: যে ধর্মের জন্য কোনো জড় বস্তু তার স্থিতি বা গতির অবস্থা বজায় রাখার চেষ্টা করে, সেই ধর্মকে পদার্থের জাড্য বলে। বস্তুর ভর যত বেশি হয়, তার জাড্যও তত বেশি হয়। সুতরাং, বলা যায়— বস্তুর ভরই তার জাড্যের পরিমাপ।


জাড্য কয় প্রকার ও কি কি: জাড্য দু’প্রকার – (i) স্থিতি জাড্য এবং (ii) গতি জাড্য।

স্থিতি জাড্য কাকে বলে?


স্থিতি জাড্য: যে ধর্মের জন্য স্থির বস্তু চিরকাল স্থির অবস্থায় থাকতে চায়, তাকে স্থিতি জাড্য (Inertia of rest) বলে।


স্থিতি জাড্যের উদাহরণ: কোনো বাস স্থির অবস্থা থেকে হঠাৎ চলতে শুরু করলে বাসের মধ্যে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা পিছনের দিকে হেলে পড়ে। কারণ, বাসটি যখন স্থির থাকে যাত্রীর দেহও তখন স্থির থাকে। এবার বাসটি হঠাৎ চলতে শুরু করলে যাত্রীর পা দুটো গাড়ির সংলগ্ন থাকায় গাড়ির সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু তাঁর দেহের উপরের অংশ স্থিতি জাড্যের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চায়। ফলে যাত্রীরা পিছনের দিকে হেলে পড়ে।


প্রযুক্ত বল = বস্তুর ভর × বস্তুর ত্বরণ।


অর্থাৎ, P = mf ; এটিই নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্রের গাণিতিক রূপ।


একটি মালবাহী ট্রাক এবং একটি খালি ট্রাক প্রতিঘন্টায় 30 কিমি বেগে সমান দ্রুতিতে চলছে। ট্রাক দুটি হুবহু এক। ব্রেক কষে কোন্‌টিকে সহজে থামানো যাবে?


ব্রেক কষে খালি ট্রাকটিকে সহজে থামানো যাবে। কারণ, মালবাহী ট্রাকটির ভর খালি ট্রাকটির ভরের চেয়ে বেশি। তাই মালবাহী ট্রাকটির ভরবেগ খালি ট্রাকটির ভরবেগের চেয়ে বেশি হবে। কারণ, ট্রাকের ভরবেগ = ট্রাকের ভর × ট্রাকের বেগ। ফলে, ব্রেক কষে মালবাহী ট্রাকটিকে থামাতে খালি ট্রাকের তুলনায় অনেক বেশি বিরুদ্ধ বল প্রয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ, খালি ট্রাকটিকে মালবাহী ট্রাকটি থেকে অনেক সহজে থামানো যাবে।


75 নিউটন বল কোনো বস্তুর উপর ক্রিয়া করে 3 m/s2 ত্বরণ সৃষ্টি করে। বস্তুটির ভর নির্ণয় করো।


নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র থেকে পাই, p = mf বা, m = ...... (i)

এখানে বস্তুর ওপর প্রযুক্ত বল = p = 75 নিউটন, বস্তুতে উৎপন্ন ত্বরণ = f = 3 m/s2 এবং বস্তুর ভর = m = ?

সুতরাং, (i) থেকে পাই, m = 75/3 kg = 25 kg.

সুতরাং, নির্ণেয় ভর = 25 কিগ্রা।


বল কি ধরনের রাশি? বলের একক গুলি কি কি?


বলের রাশি : বলের মান ও অভিমুখ দুই-ই আছে। তাই বল একটি ভেক্টর রাশি।

বলের পরম একক (Absolute units of force) কি?

CGS পদ্ধতিতে বলের পরম একক : ডাইন (Dyne).

ডাইন : এক গ্রাম ভরের কোনো বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে যে বল বস্তুটিতে 1 cm/sec² ত্বরণ সৃষ্টি করে, সেই বলকে এক ডাইন বলে।

অর্থাৎ, 1 ডাইন = 1 g × 1 cm/sec².


SI পদ্ধতিতে বলের পরম একক :  নিউটন (Newton or N).


নিউটন : এক কিলোগ্রাম ভরের কোনো বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে যে বল বস্তুটিতে 1 m/sec² ত্বরণ সৃষ্টি করে, সেই বলকে এক নিউটন বলে।

অর্থাৎ, 1 নিউটন = 1 kg × 1 m/sec².

ভরবেগ ও বল, নিউটন ও ডাইন এদের সম্পর্ক কী?


ভরবেগ ও বলের মধ্যে সম্পর্ক : (1) কোনো বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার বস্তুর ওপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে প্রযুক্ত হয়, ভরবেগের পরিবর্তনও সেই দিকে ঘটে। (2) ভরবেগ ও বল উভয়েই ভেক্টর রাশি।


নিউটন ও ডাইনের মধ্যে সম্পর্ক : 1 নিউটন = 1 kg × 1 m/sec² = 10³ g × 10² cm/sec² 10⁵ ডাইন। অর্থাৎ, 1 নিউটন = 10⁵ ডাইন।


বলের অভিকর্ষীয় একক কি? গ্রাম-ভার ও কিলোগ্রাম-ভার এর সংজ্ঞা দাও। গ্রাম-ভার ও ডাইনের এবং কিলোগ্রাম-ভার ও নিউটনের মধ্যে সম্পর্ক কী?

বলের অভিকর্ষীয় একক : CGS এবং SI পদ্ধতিতে বলের অভিকর্ষীয় একক যথাক্রমে গ্রাম-ভার ও কিলোগ্রাম-ভার।

গ্রাম-ভার সংজ্ঞা : এক গ্রাম ভরের কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বলে নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে, সেই বলকে এক গ্রাম-ভার বলে।


গ্রাম-ভার ও ডাইনের সম্পর্ক : 1 গ্রাম-ভার = 1 গ্রাম × 981 সেমি/সেকেন্ড² = 981 ডাইন।

সুতরাং, 1 গ্রাম-ভার = 981 ডাইন।


কিলোগ্রাম-ভার সংজ্ঞা : এক কিলোগ্রাম ভরের কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বলে নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে, সেই বলকে এক কিলোগ্রাম-ভার বলে।


কিলোগ্রাম-ভার ও নিউটনের সম্পর্ক : 1 কিলোগ্রাম-ভার = 1 কিলোগ্রাম × 9.81 মিটার/সেকেন্ড² = 9.81 নিউটন।

সুতরাং, 1 কিলোগ্রাম-ভার = 9.81 নিউটন।


বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ বন্ধ করার সাথে সাথে থেমে যায় না কেন?


ঘূর্ণায়মান বৈদ্যুতিক পাখাটি গতিজাড্যে থাকে। ঐ অবস্থায় পাখাটিতে বিদ্যুৎপ্রবাহ বন্ধ করলে গতিজাড্যের দরুণ পাখাটি কিছুক্ষণ ধরে ঘুরতে থাকে। কিন্তু ঘর্ষণজনিত বাধা পাখাটির ঘূর্ণনের বিপরীত দিকে ক্রিয়াশীল থাকায় পাখার ঘূর্ণন ক্রমশ কমতে থাকে এবং অবশেষে পাখাটি স্থিরাবস্থায় পৌঁছায়।

******************


নিউটনের তৃতীয় গতি সূত্র


নিউটনের তৃতীয় সূত্র থেকে কি জানা যায় : এই সূত্র থেকে আমরা ক্রিয়া এবং প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা পাই। ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া


ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া কাকে বলে? এরা কি একই বস্তুর উপর প্রযুক্ত হয় অথবা এর বৈশিষ্ট্য কি?


ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া : নিউটনের তৃতীয় সূত্রে ‘ক্রিয়া’ এবং ‘প্রতিক্রিয়া’ বলতে দুটি ভিন্ন বস্তুর ওপর প্রযুক্ত বলকে বোঝানো হয়েছে। এই সূত্র অনুযায়ী যখনই কোনো বস্তু অন্য কোনো বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করে তখনই দ্বিতীয় বস্তুটিও প্রথম বস্তুটির ওপর একটি সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রয়োগ করে। এক্ষেত্রে প্রথম বস্তু দ্বিতীয় বস্তুর ওপর যে বল প্রয়োগ করে, যদি তাকে ক্রিয়া (action) বলা হয়, তবে দ্বিতীয় বস্তু প্রথম বস্তুর ওপর যে বল প্রয়োগ করে, সেই বলকে প্রতিক্রিয়া (reaction) বলে। এই দুটি বল সব সময় একই সঙ্গে ক্রিয়া করে। ক্রিয়া যতক্ষণ স্থায়ী হয়, প্রতিক্রিয়াও ঠিক ততক্ষণ স্থায়ী হয়। প্রতিক্রিয়ার মান ক্রিয়ার উপরই নির্ভরশীল। ক্রিয়া না থাকলে প্রতিক্রিয়াও থাকে না।


ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া বলের বৈশিষ্ট্য : ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া একই সময়ে দুটি ভিন্ন বস্তুর ওপর প্রযুক্ত হয় ; অর্থাৎ, বল দুটির প্রয়োগবিন্দু আলাদা। এজন্য ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া পরস্পর সমান ও বিপরীত হলেও এরা কখনও সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। কারণ, সমান ও বিপরীতমুখী দুটি বল একই বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে।


বন্দুক থেকে গুলি ছুঁড়লে বন্দুক পেছনের দিকে ধাক্কা দেয় কেন?


বন্দুক থেকে গুলি ছোঁড়ার সময় নলের মধ্যে গুলির ওপর বল প্রযুক্ত হয়। তার ক্রিয়ায় গুলিটি প্রচণ্ড বেগে সামনের দিকে ছুটে যায়। সঙ্গে সঙ্গে গুলিটিও বন্দুকের ওপর সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করে। যার ফলে বন্দুকটি পিছনের দিকে ধাক্কা দেয়।


নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র থেকে জেটপ্লেন এবং রকেটের গতির ব্যাখ্যা করো। | আকাশে রকেট এবং জেট প্লেন কিভাবে উড়ে।


জেট বিমান ও রকেট : জেট বিমান ও মহাকাশযানের রকেটের কার্যনীতি নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্রের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত।


জেট বিমান এর কার্যনীতি কি : জেট বিমানের ইঞ্জিনের মধ্যে জ্বালানি থাকে। যখন বিমানটি চলতে শুরু করে তখন বিমানের সামনের ছিদ্র দিয়ে বায়ু সবেগে জ্বালানির সঙ্গে মিশে উচ্চচাপে দহন কার্য চালায়, ফলে আবদ্ধ আধারে গ্যাস উৎপন্ন হয়। ঐ গ্যাস অতিরিক্ত বায়ুর সঙ্গে মিশে বিমানের পেছনের দিকে একটি সরু নলের মধ্য দিয়ে প্রচণ্ডবেগে বের হতে থাকে। এই গ্যাস প্রবাহকে জেট (jet) বলে। এর ফলে উৎপন্ন প্রতিক্রিয়া বল বিমানটিকে সমানের দিকে গতিশীল করে। তখন বিমানটি তীব্র গতিতে আকাশ পথে এগিয়ে চলে। জেট বিমানে পেট্রোল ও বায়ুর মিশ্রণকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাই খুব বেশি উঁচুতে যেখানে বায়ুর ঘনত্ব খুব কম সেখানে জেট ইঞ্জিন কাজ করতে পারে না।


রকেট কিভাবে মহাকাশে যায় : রকেটের কার্যনীতি অনেকটা জেট বিমানের মতো। রকেটের দহন কক্ষে পাম্পের সাহায্যে তরল গ্যাসোলিন ও তরল অক্সিজেনের মিশ্রণকে প্রবেশ করানো হয় এবং যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ঐ জ্বালানিকে জ্বালানো হয়। মিশ্রণটি জ্বললেই অতি উচ্চচাপে গ্যাস উৎপন্ন হয়ে রকেটের নীচের দিকের একটি সরু নলের মধ্য দিয়ে বের হতে থাকে। এর ফলে বিপরীতমুখী যে প্রচণ্ড প্রতিক্রিয়া বলের সৃষ্টি হয়,। সেই প্রতিক্রিয়া বলই রকেটকে তীব্রবেগে মহাকাশে পৌঁছে দেয়।


জেট বিমানকে আবহমণ্ডল থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করতে হয়। যে কারণে জেট বিমান বায়ুমণ্ডলের ওপরে উঠতে পারে না। কিন্তু রকেটের খোলে জ্বালানি ও তরল অক্সিজেন থাকে। তাই রকেট উৎক্ষেপণের জন্য বায়ুর প্রয়োজন হয় না। এছাড়া বায়ুশূন্য উর্ধ্বাকাশে বায়ুর ঘর্ষণজনিত বাধা না থাকায় রকেট তীব্রবেগে ওপরে উঠে মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহকে স্থাপন করতে পারে।


ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সমান ও বিপরীতমুখী হয় কী? উত্তরের সমর্থনে পরীক্ষা দাও।


ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সমান ও বিপরীত : ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া যে সমান ও বিপরীতমুখী, স্প্রিং তুলার সাহায্যে তা দেখানো যায়। দুটি স্প্রিং-তুলা নিয়ে একটির হুকের সঙ্গে অপরটির হুক্ যুক্ত করে বাম ও ডান হাত দিয়ে সমান বলে স্প্রিং-তুলা দুটিকে বিপরীত দিকে টানলে দেখা যাবে স্প্রিং-তুলা দুটির কাঁটা সমান পাঠ নির্দেশ করছে। এবার একটি স্প্রিং-তুলার আংটাকে কোনো দেওয়ালের একটি হুকের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে আটকে রেখে অন্য স্প্রিং-তুলাটির অপর প্রান্তের হাতল ধরে টানা হল। দেখা যাবে স্প্রিং তুলা দুটির কাঁটা আগের মতোই সমান পাঠ নির্দেশ করছে। মনে হবে কেউ যেন হাত দিয়ে দেওয়ালে যুক্ত স্প্রিং তুলাটিকে দেওয়ালের দিকে টানছে। অর্থাৎ স্প্রিংয়ের খোলা প্রান্তে প্রযুক্ত বল (বা ক্রিয়া) এর ফলে দেওয়ালে যুক্ত স্প্রিং তুলাটিতে সমান প্রতিক্রিয়া বলের সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং, পরীক্ষাটি থেকে প্রমাণিত হয়—ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া পরস্পর সমান ও বিপরীতমুখী।


থেমে থাকা বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে যাত্রীরা পিছনের দিকে হেলে পড়ে কেন?


কোনো বাস স্থির অবস্থা থেকে হঠাৎ চলতে শুরু করলে বাসের মধ্যে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা পিছনের দিকে হেলে পড়ে। কারণ, বাসটি যখন স্থির থাকে যাত্রীর দেহও তখন স্থির থাকে। এবার বাসটি হঠাৎ চলতে শুরু করলে যাত্রীর পা দুটো গাড়ির সংলগ্ন থাকায় গাড়ির সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু তাঁর দেহের ওপরের অংশ স্থিতি জাড্যের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চায়। ফলে যাত্রীরা পিছনের দিকে হেলে পড়ে।


চলন্ত গাড়ি হঠাৎ থেমে গেলে গাড়ির যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে কেন?


চলন্ত গাড়ি হঠাৎ থেমে গেলে গাড়ির ভেতরের যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কারণ, গাড়িটি যখন গতিশীল অবস্থায় থাকে, তখন গাড়িটির যাত্রীর দেহের সমস্ত অংশই গাড়ির সঙ্গে সমবেগে থাকে। এবার গাড়িটি হঠাৎ থেমে গেলে যাত্রীর পা দুটো গাড়ির সংলগ্ন বলে হঠাৎ স্থির হয়ে যায়, কিন্তু দেহের ওপরের অংশ গতিজ্যাড্যের দরুন সামনের দিকে কিছুটা এগিয়ে যায়। ফলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২

সারা দুনিয়ার ট্রাফিক জ্যামের খবর গুগল কিভাবে জানে?

সারা দুনিয়ার ট্রাফিক জ্যামের খবর গুগল কিভাবে জানে? 



আজকাল রাস্তার ট্রাফিক জ্যামের অবস্থা জানতে আমরা গুগল ম্যাপ ব্যবহার করি। আর  জ্যামের পরিস্থিতি হিসেব করে গুগুল খুব ভালভাবে এটাও বলে দেয় যে শাহবাগ থেকে রামপুরা যেতে আপনার কতক্ষন সময় লাগবে। কিন্তু গুগল এই কাজটা করে কিভাবে? দুনিয়ার সব গাড়ির সাথেই কি গুগুলের ট্র্যাকার লাগানো আছে? নাকি স্যাটেলাইট ক্যামেরার ছবিতে গুগোল রাস্তার ছবি দেখে জ্যাম বুঝতে পারে? 

আসলে সারা দুনিয়ার সব গাড়িতে গুগলের ট্র্যাকার লাগানো নেই। আর স্যাটেলাইট ক্যামেরায় পুরা দুনিয়ার ছবি প্রতি সেকেন্ডে এলানাইসিস করে প্রতি সেকেন্ডে জ্যামের আপডেট দেওয়ার মত শক্তিশালী কম্পিউটার ও ডাটা এনালাইসিস সফটয়ার এই মুহূর্তে কারও কাছেই নেই। কারন এর জন্য অস্বাভাবিক পরিমাণ ডাটা নিয়ে কাজ করতে হবে। গুগল এই কাজটা করে আপনার স্মার্ট ফোনের লোকেশন ব্যবহার করে। আমরা প্রায় সবাই স্মার্টফোনে লোকেশন শেয়ার করে রাখি। কোন রাস্তার উপর কতগুলো স্মার্ট ফোন আছে, আর সেগুলো কি বেগে চলাচল করছে তা হিসেব করে গুগোল রাস্তার ট্রাফিক জ্যামের ম্যাপ তৈরি করে। 

কিন্তু কিছুদিক আগে এক লোক একটি লাগেজে ৯৯ টা মোবাইল নিয়ে বার্লিনের রাস্তা দিয়ে ধীরে ধীরে হেটে বেড়িয়েছে। ফলে গুগোল ওই ফাকা রাস্তাকেই ট্যাফিক জ্যাম মনে করে লাল মার্ক করে দিয়েছিল। গুগল অবশ্য এই হ্যাক ধরতে পেরেছে, আর প্রতিক্রিয়াও 

জানিয়েছে । গুগল সেই পথচারিকে ধন্যবাদ দেয় । গুগল বলে যে- ভারত, মিশর বা ইন্দোনেশিয়াতে তারা রাস্তার গাড়ি ও মোটরসাইকেলগুলোকে আলাদাভাবে সনাক্ত করতে পারে কিন্তু হ্যান্ড কার্ট সনাক্তকরার প্রতি কখনো দৃষ্টি দেয়নি। এখন থেকে তারা হ্যান্ডা কার্ট বা ট্রলিকেও হিসেবে ধরবে।  

তথ্যসুত্রঃ https://www.vice.com/en_us/article/9393w7/this-man-created-traffic-jams-on-google-maps-using-a-red-wagon-full-of-phones

ঘুমের মধ্যে বোবায় ধরে কেন?



অনেকেই ঘুমের মধ্যে হঠাৎ করে জেগে ওঠেন, শত চেষ্টা করেও হাত পা নাড়াতে পারেন না, অন্যদিকে শ্বাস নিতেও খুব কষ্ট হচ্ছে। অনেকেই এসময় নিজের দেহ থেকে আত্মাকে আলাদা হয়ে যেতে দেখেন, কেউ ভূত-জীন-পরী ইত্যাদি দেখে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কেন এমন হয়? 

আসলে আমাদের মস্তিষ্ক বেশ জটিল একটি অঙ্গ। আর বুদ্ধিমত্তা ও চেতনা বিষয়টাকে আমরা যেমন একটি আলাদা জিনিস ভাবি বিষয়টা তেমন নয়। এই যে আমি বলে ভাবছি- আমি খাচ্ছি, আমি হাটছি, আমি সিদ্ধান্ত নিচ্ছি- এই আমি আসলে অনেকগুলো প্রক্রিয়ার একটা সম্মন্নিত রূপ। এই আমি থেকে এক একটি উপাদান যদি বাদ দেওয়া হয় তখন আপনি আর এই আপনি থাকবেন না। যেমন স্বপ্ন দেখার সময় আপনার যৌক্তিক চিন্তা করার অংশটা বন্ধ থাকে বলে আপনি গাড়ি নিয়ে অনায়াসে উড়ে যান। সেই আপনিও যেন একটু কেমন যেন, ঠিক দিনের বেলার আপনি না। অদ্ভুত সব কাজ করেন, আর আপনার চারপাশের দৃশ্যও থাকে অদ্ভুত।

আবার আমাদের মস্তিষ্কের অনেকগুলো বিপরীতধর্মী দুই অংশ একই সাথে কাজ করে বলে আমরা মানুষরা অনেক স্ববিরোধী কাজ করি। নিজেদের জন্য ক্ষতিকর অনেক কাজ করি, নিজেদের জন্য লাভজনক অনেক কাজ করি না। বাড়িতে থাকা বউকে অনেক ভালবাসি, কিন্তু তাকে রেখে আরেক সুন্দরীর সাথে প্রেমও করি। সেই প্রেম করার সময় আবার বাড়িতে রাখা বউয়ের জন্য মায়াও লাগে। মনে হয় কাজটা ভাল হচ্ছে না। এমন হয়, কারন আপনার মস্তিষ্কের সরীসৃপ অংশ (reptile cortex) আপনাকে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি ঠেলে দেয়। কিন্তু পাইমেট ব্রেইন বা নিওকর্টেক্স আপনাকে এটাও বলে যে এটি পারিবারিক বন্ধনের জন্য ক্ষতিকর। 

আমাদের ঘুমের বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের মস্তিষ্কের আলাদা আলাদা অংশ সক্রিয় থাকে। স্বপ্নহীন ঘুমের মধ্যে তেমন কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু স্বপ্নযুক্ত ঘুমের সময় যদি আমরা পিঠের উপর ভর দিয়ে শুয়ে থাকি তাহলে অনেক সময় আমাদের শ্বাসনালী দিয়ে বাতাস নিতে সমস্যা হয়। তখন অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মস্তিকের সতর্কীকরন ব্যবস্থা আমাদের মস্তিষ্ককে একটু জাগিয়ে দেয়। এতে যদি আমরা পাশ ফিরে শুই, বা নড়াচরা করি তাহলে অনেক সময় এই শ্বাসের সমস্যা ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় তা ঠিক হয় না। তখন আমাদের মস্তিক্স এভাবে দুই তিন বারের সতর্কের ফলে প্রায় পুরোপুরি জেগে যায়। কিন্তু ঘুমের সময় আমাদের ইচ্ছেমত নড়াচড়া করার অংশটা অনেক ক্ষেত্রেই এ্যাকটিভ হয় না। তখনই শুরু হয় বোবায় ধরা। কারন আপনার মস্তিষ্ক তখন স্বপ্ন দেখার স্টেজে, তাই আপনি ভূত প্রেত সহ যেকোনো আজব কিছুই দেখতে পারেন, হয়ত শুয়ে শুয়ে গাড়িও চালতে পারেন। কারন আপনার যুক্তির অংশটা কাজ করছে না। কিন্তু আপনার মস্তিক্সের প্রায় অনেকটাই আবার জেগে আছে, তাই আপনি যে আপনি, সেই চিন্তাটা সচেতনভাবে করতে পারেন। অন্যদিকে আপনার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। এর ফলে মস্তিক্সের ভয় সেন্টার এ্যাকটিভ হয়ে যায়। আর সবচেয় বড় সমস্যা হলো- আপনি চাইলেও আপনার হাত পা নাড়াতে পারেন না। কারন মস্তিক্সের সেই অংশটি এখন অফ আছে।  

মূল কথা হলো- এই বোবায় ধরা এমন একটি অবস্থা, যখন আমাদের শ্বাসকষ্ট হয় এবং তার কারনে মস্তিষ্কের বেশ কিছু অংশ এ্যাক্টিভ থাকে কিন্তু আবার প্রয়োজনীয় বেশ কিছু অংশ এ্যাক্টিভ না থাকার কারনে আমাদের এক ধরণের অস্বাভাবিক অভিজ্ঞতা হয়।  

তথ্যসূত্রঃ Cheyne, J.; Rueffer, S.; Newby-Clark, I. (1999). "Hypnagogic and Hypnopompic Hallucinations during Sleep Paralysis: Neurological and Cultural Construction of the Night-Mare". Consciousness and Cognition. 8 (3): 319–337.

শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০২২

১৩০০ কোটি বছরের ছবি যেভাবে দেখা গেলো জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে

 

প্রতি সেকেন্ডে আলোর গতিবেগ ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল। সেই হিসাবে বর্তমান নক্ষত্রের যে আলো আমরা দেখি, তা কিন্তু আজকের নয়। তা আসলে ১৩০০ কোটি বছরেরও বেশি পুরোনো। যা এতদিনে আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। টেলিস্কোপে পৌঁছানোর আগে কয়েকশ কোটি বছর ধরে ভ্রমণ করেছে এ আলো। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ যে ছায়াপথের ছবি তুলেছে, তা ৪৬০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। সেই হিসাবে যে ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে তা ১৩০০ কোটি বছর আগেকার।




বিজ্ঞানীদের মতে, মহাজগতের বয়স ১৩৮০ কোটি বছর। বিজ্ঞানীদের সুবিধা হওয়ার আরও বড় কারণ হলো, উন্নত টেলিস্কোপ হওয়ায় জেমস ওয়েব উজ্জ্বল আর স্পষ্ট ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছে।

নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেন, ‘আমরা ১ হাজার ৩০০ কোটি বছরেরও বেশি পেছনের দিকে তাকাচ্ছি।’ তিনি আশাপ্রকাশ করে আরো বলেন, ‘নাসা শিগগিরই আরও ছবি প্রকাশ করবে। সেগুলো প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি বছর আগেকার। এসব ছবি মহাবিশ্বের আনুমানিক শুরুর বিন্দুর কাছাকাছি। অর্থাৎ আমরা প্রায় শুরুতে ফিরে যাচ্ছি।’

বিজ্ঞানীরা ওয়েব টেলিস্কোপের তথ্যের গুণগত মান বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারছেন যে, এই ছবিতে যা দেখা যাচ্ছে এই টেলিস্কোপ তার থেকেও অনেক গভীরে গিয়ে মহাজগতের চিত্র তুলে আনতে সক্ষম। এর ফলে, অতি শক্তিশালী এই দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে মহাশূন্যের অনেক ভেতর পর্যন্ত এখন দেখা এবং তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞানীদের আশা পৃথিবীর মতো যেসব গ্রহের বাতাসে গ্যাস রয়েছে, একদিন হয়তো ওয়েব টেলিস্কোপ সেসব গ্রহের ওপর নজরদারি করতে সক্ষম হবে। সেটা হলে ওই সব গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে একটা ধারণা পাবার যথেষ্ট সম্ভাবনা তৈরি হবে।

বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০২২

১৩০০ কোটি বছর আগের মহাবিশ্বের রঙিন ছবি দিল নাসা

 


প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি বছর আগের আলোর সন্ধান পেল নাসার টেলিস্কোপ। সেই ছবি হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে প্রকাশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনছবি: রয়টার্স


১ হাজার ৩০০ কোটি বছর আগে মহাবিশ্বের এক রঙিন ছবি দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা গ্যালাক্সিগুলোর এমন ছবি এই প্রথম প্রকাশ করা হলো।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে সেই ছবি প্রকাশ করে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অবদানের কথা তুলে ধরেন। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের।

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে এই ছবি ধারণ করা হয়। ছবিটি মহাবিশ্বের গ্যালাক্সিগুলোর একটি অংশকে ধারণ করেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে এসএমএসিএস ০৭২৩।

ছবিতে মহাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা জ্বলজ্বলে আলোক রশ্মির বিচ্ছুরণ ফুটে উঠেছে। মহাবিশ্বের প্রাচীনতম রূপ এটি। মহাবিশ্বের এই ছবি নিয়ে হইচই পড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে। ছবি উন্মোচন করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, নাসা অভূতপূর্ব কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও গোটা মানবসভ্যতার জন্য এটি ঐতিহাসিক দিন।

নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেছেন, ছবিটিতে বিভিন্ন গ্যালাক্সির চারপাশে বাঁকানো গ্যালাক্সির আলো ফুটে উঠেছে। টেলিস্কোপে পৌঁছানোর আগে কয়েক শ কোটি বছর ধরে ভ্রমণ করেছে এ আলো।

বিল নেলসন আরও বলেন, ‘আমরা ১ হাজার ৩০০ কোটি বছরেরও বেশি পেছনের দিকে তাকাচ্ছি।’ তিনি বলেন, নাসা শিগগিরই আরও ছবি প্রকাশ করবে। সেগুলো প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি বছর আগেকার। এসব ছবি মহাবিশ্বের আনুমানিক শুরু বিন্দুর কাছাকাছি। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় শুরুতে ফিরে যাচ্ছি।’

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নাসার নতুন এই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ আগের হাবল টেলিস্কোপ থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে এক হাজার কোটি ডলার। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটি মহাশূন্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়িয়ে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই টেলিস্কোপ। টেলিস্কোপের মূল লক্ষ্য দুটি। এক, প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি বছর আগের মহাবিশ্বে জ্বলে ওঠা আদি নক্ষত্রগুলোর ছবি তোলা। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে দূরদূরান্তের গ্রহগুলো প্রাণ ধারণের উপযোগী কি না, তা খতিয়ে দেখা।

ছবিটি উদ্বোধনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘এসব ছবি সারা বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিতে চায় যে যুক্তরাষ্ট্র বড় বড় কাজ করতে পারে। আর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, বিশেষ করে শিশুদের মনে করিয়ে দিতে চায়, কোনো কিছুই আমাদের জন্য দুরূহ নয়।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘তিন যুগ ধরে নির্মিত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটি নতুন নতুন ছবিটি দিয়ে মহাবিশ্বে সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে পাল্টে দিতে পারে।’

শনিবার, ২ জুলাই, ২০২২

আলো, আলোর গতিবেগ ও আলোকবর্ষ

আলো, আলোর গতিবেগ ও আলোকবর্ষ


আলো এক ধরনের শক্তি, তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গআলো যা বস্তুকে দৃশ্যমান করে, কিন্তু এটি নিজে অদৃশ্য। আমরা আলোকে দেখতে পাই না, কিন্তু আলোকিত বস্তুকে দেখি। মাধ্যমভেদে আলোর বেগের পরিবর্তন হয়ে থাকে। আলোর বেগ মাধ্যমের ঘনত্বের ব্যস্তানুপাতিক। শুন্য মাধ্যমে আলোর বেগ সবচেয়ে বেশি, আলোর বেগ অসীম নয়। শূন্যস্থানে আলোর বেগ প্রতি সেকেন্ডে ২৯,৯৭,৯২,৪৫৪ মিটার বা ১,৮৬,০০০ মাইল। কোন ভাবেই আলোর গতিকে স্পর্শ করা সম্ভব নয়। আলোর কোনো আপেক্ষিক বেগ নেই । আলোর বেগ সর্বদা সমান।

আলোকবর্ষ 

শূন্য মাধ্যমে আলোর এক বছর সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে এক আলোকবর্ষ বলে।


অর্থাৎ 1 আলোকবর্ষ মান = 300000×365×24×60×60 কিলোমিটার

= 9.46×1012 কিলোমিটার প্রায়।

জ্যোতির্বিদ্যায় কোটি কোটি মাইল দূরত্বে হিসাব করা হয়। এই বিরাট দূরত্ব মাপার জন্য একক হিসাবে আলোকবর্ষ ব্যবহৃত হয়। শূন্য মাধ্যমে আলোর এক বছর সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে এক আলোকবর্ষ বলা হয়।

আলোকবর্ষের মান

এক আলোকবর্ষ = 186000×60×60×24×365 মাইল

= 5.86×1012 মাইল প্রায়

= 9.46×1012 কিলোমিটার।

পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র আলফা সেন্টাউরি থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে প্রায় 4.4 বছর সময় লাগে। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে ওই নক্ষত্রটির দূরত্ব প্রায় 4.4 আলোকবর্ষ। এছাড়া আকাশে এমন সব নক্ষত্র রয়েছে পৃথিবী থেকে তাদের দূরত্ব বহু কোটি আলোকবর্ষ।

আলোর গতিবেগ এত তীব্র হওয়া সত্ত্বেও এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে আলোরও কিছু সময় লাগে। তবে আলোর গতিবেগ এত তীব্র যে, আমাদের জানা কোন গতিবেগের সঙ্গে এর তুলনা করা যায় না। আলোর তীব্র গতিবেগের জন্য মনে হয় যে, আলোর গতিতে কোন সময় লাগে না। সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব 15 কোটি কিলোমিটার। কিন্তু এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে আলোর সময় লাগে 8.3 মিনিট মাত্র। অর্থাৎ 1 সেকেন্ডে আলো পৃথিবীকে 7 বার ঘুরে আসতে পারে।

মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২

চাঁদ; উপগ্রহ

 প্রাকৃতিক উপগ্রহ' একটি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু যা কোন একটি গ্রহ বা তার থেকে বড় অন্য কোন বস্তুকে কেন্দ্রকে করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান থাকে এবং অবশ্যই যা মানব সৃষ্ট নয়। এ ধরনের বস্তুকে মাঝেমাঝেই চন্দ্র হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই সংজ্ঞাটির উপর ভিত্তি করে একটি তারা চতুর্দিকে ঘূর্ণায়মান কোন গ্রহ বা কোন ছায়াপথের কেন্দ্রকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান কোন তারাকেও এই শ্রেণীতে ফেলা যায়, অবশ্য এই ব্যবহারটি সচরাচর করা হয় না। সকল ক্ষেত্রেই কোন গ্রহ, বামন গ্রহ বা ক্ষুদ্র গ্রহ-এর সাথে প্রাকৃতিকভাবে বিরাজমান বস্তুগুলোকে প্রাকৃতিক উপগ্রহ বলা হয়ে থাকে।



আমাদের সৌর জগতের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৪০ টি প্রাকৃতিক উপগ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬২ টি উপগ্রহ গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, ৪ টি উপগ্রহ ঘূর্ণায়মান আছে বামন গ্রহ-কে কেন্দ্র করে এবং অন্যগুলো ক্ষুদ্র সৌর জাগতিক বস্তুকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান আছে। অন্যান্য তারা এবং তাদের গ্রহদেরও উপগ্রহ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২২

পড়ন্ত বস্তু, গ্যালিলিও ও একটি প্যারাডক্স



 



পড়ন্ত বস্তু, গ্যালিলিও ও একটি প্যারাডক্স

পড়ন্ত বস্তুর ব্যাপারে আজব একটা ধারণা পোষণ করতেন অ্যারিস্টোটল। ভাবতেন, মহাবিশ্বের কেন্দ্র হলো পৃথিবী। মহাবিশ্বের তাবৎ জিনিস তাই সেই কেন্দ্রের দিকে আসতে চায়।

তাহলে ধোঁয়া আর আগুন কেন ওপরে ওঠে? এর যুত্সই ব্যাখ্যা ছিল না অ্যারিস্টোটলের কাছে। জোড়াতালি দিয়ে একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করাবার চেষ্টা করেন। বলেন, যেসব বস্তুর স্বর্গীয় গুণ আছে, সেগুলো ওপরে উঠে যায়। আর যে সব বস্তু স্বর্গীয় নয়, স্বর্গে যাদের স্থান নেই, তাদের যতই ওপরে ওঠানো হোক, ঠিক পৃথিবীতে ফিরে আসবে।

অ্যারিস্টোটলের যুগে আরেকটা বড়সড় ভুল ধারণা চালু ছিল। দুটি পড়ন্ত বস্তু যদি সমান ওজনের (ভরের) না হয়, তাহলে ওপর থেকে একই গতিতে পৃথিবীতে পড়বে না। ভারি বস্তুটির পড়ার গতি বেশি হবে, হালকা বস্তুটির কম।

আবার যদি হালকা বস্তুর ওজন বাড়ানো হয়, তাহলে তার পতনের গতিও নিশ্চয়ই বাড়বে অ্যারিস্টোটলের মত অনুসারে। এখন ১ কেজি আর ১০ কেজি ওজনের পাথরদুটো যদি দড়ি দিয়ে বেঁধে ওপর থেকে ফেলা হয়, তাহলে কী হবে? এখানেই ঝামেলাটা বাঁধে। তৈরি হয় প্যারাডক্স। ভারী বস্তুটা চাইবে দ্রুত তার নিজের বেগে পড়তে। অন্যদিকে হালকা বস্তুও পড়তে চাইবে তার নিজের বেগে।

তার মানে সে ভারি বস্তুটার পড়ার বেগে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। পারস্পারিক দ্বন্দ্ব বল কাজ করবে তাদের মধ্যে। ভারি বস্তু তার নিজের গতিতে পড়তে পারবে না হালকা বস্তুর বাধার কারণে। অন্যদিকে হালকা বস্তু আগের মতো কম বেগে পড়তে পারবে না, কারণ ভারী বস্তু তাকে দ্রুত নিচে নামাতে চাইবে। সুতরাং বস্তু দুটি তাদের নিজস্ব বেগের লব্ধিবেগে একসাথে পড়তে চাইবে। সেই লব্ধিবেগটা হবে ছোট পাথরটার বেগের চেয়ে বেশি কিন্তু ভারী পাথরটার চেয়ে কম।

পড়ন্ত বস্তু সম্পর্কে অ্যারিস্টোটলের মত ঠিক হলে এমনটাই ঘটার কথা। কিন্তু এখানেও তো আরেক সমস্যা হাজির, যেটা গ্যালিলিও লক্ষ্য করেছিলেন। দুটো পাথরকে দড়িতে বেঁধে দিলে তাদের মিলিত ওজন যেকোনো একটির ওজনের চেয়ে বেশি। ১ কেজি আর ১০ কেজি পাথরকে দড়ি দিয়ে বাঁধলে তাদের মিলিত ওজন দাঁড়াবে ১১ কেজি। যেটা ১০ কেজির চেয়ে বেশি আবার ১ কেজির চেয়েও বেশি। সুতরাং তাদের মিলিত বেগও ভারী পাথরটার চেয়ে বেশি হওয়া উচিত। কিন্তু সেটা আবার অ্যারিস্টোটলের থিওরির সাথে মেলে না। কারণ আগে দেখেছি লব্ধি বেগে পড়বে পাথর দুটো। আর লব্ধিবেগ আবার ভারী পাথরটার নিজস্ব বেগের চেয়ে কম। ফলে তৈরি হয় স্ববিরোধিতা।

এই স্ববিরোধ বা প্যারাডক্সের সমাধান খুঁজতে চাইলেন গ্যালিলিও। সমাধানও পেয়ে গেলেন। বুঝলেন, এই সমস্যার সমাধান তখনই সম্ভব, যদি বস্তু দুটি একই সাথে একই বেগে মাটিতে পড়তে থাকে।

গ্যালিলিও বললেই তো আর সবাই মানবেন না। এতোদিন আঁকড়ে ধরা অ্যারিস্টোটটলের মতবাদকে যে তাহলে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করতে হয়। গ্যালিলিও শুধু মুখের কথায় বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি যেকোনো বৈজ্ঞানিক মতবাদকে পরীক্ষা করে যাচাই করে দেখতে চাইতেন। এজন্যই তাঁকে বলা হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের জনক।

কীভাবে পরীক্ষা করেছিলেন গ্যালিলিও? এ নিয়ে মজার একটা গল্প চালু আছে। গ্যালিলিওর বাস ছিল ইতালির পিসা নগরীতে। পিসার হেলানো মিনারের খ্যাতি গোটা দুনিয়া জুড়ে। আজও সে খ্যাতিতে ভাটা পড়েনি। অনেকে মনে করেন, গ্যালিলিও পিসার সেই মিনারের ওপর উঠেছিলেন। তারপর সেখান থেকে দুটি আলাদা ভরের বস্তু ছেড়ে দেন। এবং প্রমাণ করেন, পড়ন্তু বস্তুর বেগের সাথে তার ভরের কোনো সম্পর্ক নেই। অনেক বছর পরে নিউটন গিনি আর সোনার পালক পরীক্ষার মাধ্যমে গ্যালিলিওর এই ধারণার প্রমাণ করেন।

লেখক: সহসম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা

সূত্র: মহাকর্ষের কথা/সুকন্যা সিংহ

অভিকর্ষ/জর্জ গ্যামো, অনুবাদ: মো. তোফাজজ্জল হোসেন সরকার

https://aliahmednuman.blogspot.com/?m=1

শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২

পৃথিবী সবকিছুই তার কেন্দ্রের দিকে টানে। যেমন বাতাস, তাহলে আগুন কেন অভিকর্ষের বিপরীতে প্রবাহিত হয়?



পৃথিবী সবকিছুই তার কেন্দ্রের দিকে টানে। যেমন বাতাস, তাহলে আগুন কেন অভিকর্ষের বিপরীতে প্রবাহিত হয়?

প্রশ্নটি ভালোই ছিলো। তবে আমি বেশী অবাক হয়েছি এই প্রশ্নের অন্যন্য উত্তরগুলো দেখে। তারা এত জ্ঞানী যে, সহজ একটি বিষয় জটিল করে তুলেছে। বারবার আইনেস্টাইনের সেই কথাটা মনে পড়ে - তুমি যদি কোন জিনিস সহজভাবে বোঝাতে না পারো, তার মানে, তুমি নিজেই জিনিসটা ভালো বোঝ না।

পদার্থবিজ্ঞানের একেবারে প্রাথমিক জ্ঞান - পদার্থ কি? একজন ৫ম শ্রেনীর শিশুরও এটা জানার কথা। পদার্থ হল- যার আয়তন আছে, ওজন আছে, স্থান দখল করে, বল প্রয়োগ করলে বাধা দেয়। পানি, গ্যাস, বাতাস, ইত্যাদি সবই পদার্থ। তবে, আগুন কোন পদার্থ নয়। আগুনের আয়তন ও ওজন নেই, এটি স্থান দখল করে না, বল প্রয়োগ করলে বাধা দেয় না।


পদার্থ নয়, এমন আরো জিনিস আছে, যেমন আলো, শব্দ, তাপ ইত্যাদি। এগুলো কিন্তু পৃথিবীর মধ্যকর্ষণ শক্তি টানে না। কারন একটাই, এমন টানাটানি (আকর্ষণ) করতে হলে, জিনিসটি অবশ্যই পদার্থ হতে হবে। আগুন কোন পদার্থ নয়, এটাকে পৃথিবীর মধ্যকর্ষণ শক্তি টানে না।

তবে, আগুন উপরে উঠার পেছনে মধ্যকর্ষণ শক্তির ভুমিকা রয়েছে। আগুনের আশেপাশে বাতাস ঘিরে থাকে। সেই বাতাসের গরম অংশ হালকা হয়ে উপরে ভেসে ওঠে, আর ঠান্ডা ও ভারী অংশ পৃথিবীর মধ্যকর্ষণ শক্তি টানে নীচে নামে। চারিদিকের বাতাসের এমন অবিরাম ওঠা-নামার ফলে চারপাশ থেকে চাপ লেগে, আগুনের শিখা অমন লম্বা হয়ে যায়। মহাশূন্যে মধ্যকর্ষণ শক্তি টানে না, বাতাস ওঠা-নামা করে চাপ দেয় না। এই কারনে, মহাশূন্যে আগুনের শিখা গোল হয়ে জ্বলে (উপরে ছবি দেখুন)

দৃষ্টব্য: যারা এই লেখাটি পড়ে মন্তব্য করেছেন, তাদের ধন্যবাদ। তাদের সমস্যাটা হল, আমার ব্যাখ্যাটা এত সহজে গেছে যে, তাদের সহ্য হচ্ছে না। তাই বিভিন্ন কায়দায় তারা জিনিসটা জটিল করছে।

https://facebook.com/aliahmedunofficial

https://facebook.com/rumman.naik 

https://aliahmedonline.wordpress.com/ 

https://bn.quora.com/

কি হবে পৃথিবীতে যদি মাত্র ৫ সেকেন্ড অক্সিজেন না থাকে!



কি হবে পৃথিবীতে যদি মাত্র ৫ সেকেন্ড অক্সিজেন না থাকে!

আচ্ছা এখন একটিবার ভেবে দেখুন তো পৃথিবীর সব অক্সিজেন যদি হঠাত উধাও হয়ে যেতো, বেশিক্ষণ না হয়ত শুধু পাঁচ সেকেন্ডের জন্যই। তাহলে কী হত?

পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ২১ ভাগই অক্সিজেন। আর ৭৮ ভাগ নাইট্রোজেন। বায়ুমন্ডলের বড় অংশ জুড়ে না থাকলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই অক্সিজেন। অক্সিজেন ছাড়া প্রানী, উদ্ভিদ, পানি এমনকি মানুষও নিজস্ব অবস্থানে থাকতো না।

অক্সিজেন, দ্বিপরমাণুক অম্লজান বায়ুর প্রধান দুইটি উপাদানের একটি। উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার সময় এই মৌলটি উত্‍পন্ন হয় এবং এটি সকল জীবের (উদ্ভিদ ও প্রাণীর) শ্বসনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান।

আচ্ছা এখন একটিবার ভেবে দেখুন তো পৃথিবীর সব অক্সিজেন যদি হঠাত উধাও হয়ে যেতো, বেশিক্ষণ না হয়ত শুধু পাঁচ সেকেন্ডের জন্যই। তাহলে কী হত? মনে হতেই পারে মাত্র পাঁচ সেকেন্ড নিঃশ্বাস বন্ধ করে রাখলেই তো হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই পাঁচ সেকেন্ডে পৃথিবীর কি হবে? আশ্চর্য হলেও সত্যি, ভেঙ্গে পড়বে কংক্রিটের স্থাপনা, উল্কার মতই খসে পড়বে আকাশে উড়তে থাকা প্লেন, ঘটে যাবে পরিবেশের বিশাল বিপর্যয়।

এবার একটু কল্পনা করুন, পাঁচ সেকেন্ড অক্সিজেন ছাড়া কি হতে পারে। যে কারো মনে হতেই পারে, মাত্র পাঁচ সেকেন্ড অক্সিজেন ছাড়া কি আর হবে। কারণ বেশির ভাগ মানুষই কমপক্ষে ৩০ সেকেন্ড শ্বাস-প্রশ্বাস না নিয়ে থাকতে পারে। তাই পাঁচ সেকেন্ড অক্সিজেন ছাড়া হয়তো মানুষ টিকে থাকতে পারবে। কিন্তু বাকি সব কিছুর কি হবে? বলা হয়, অক্সিজেন বিহীন মাত্র পাঁচ সেকেন্ডেই পাল্টে যাবে পৃথিবী।


সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশে বাধা দেয় ওজন স্তর। এ স্তরটি অক্সিজেনের তৈরি। তাই অক্সিজেন না থাকলে, এই ক্ষতিকর রশ্মি থেকে আমাদের রক্ষা পাবার কোন উপায় থাকবে না। রোদে মারাত্মক ভাবে পুড়ে যাবে ত্বক। আর পৃথিবী অনেক বেশি বিপদজনক হয়ে উঠবে।

অক্সিজেন ছাড়া কংক্রিটের তৈরি সব স্থাপনাই ভেঙ্গে পড়বে। কারণ কংক্রিটকে জমাটবদ্ধ রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে এটি। তাই এটি ছাড়া কংক্রিট ধুলা ছাড়া আর কিছুই নয়। একটি ভবনের কথাই ধরা যাক। অক্সিজেন ছাড়া ভবনের অপরিশোধিত সব ধাতু একসাথে মিলে যাবে। কারণ ধাতুতে অক্সিডেশনের প্রলেপ থাকে যা ধাতুকে আলাদা করে রাখে। এই প্রলেপ ছাড়া ধাতুগুলো তাত্‍ক্ষণিক একটি অন্যটির সাথে আটকে যাবে।

অক্সিজেন ছাড়া আগুনও থাকবে না। গাড়ির দহন প্রক্রিয়া থেমে যাবে। ইলেকট্রিক নয়, পরিবহনের এমন সব প্রক্রিয়া অচল হয়ে পড়বে। সড়কে আটকে যাবে লাখ লাখ গাড়ি। বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন না থাকলে আকাশে থাকা বিমানও আকস্মিকভাবে মাটিতে আছড়ে পড়বে।

অক্সিজেনের অভাবে আমাদের শ্রবণ স্তর ফেটে যাবে। অক্সিজেন হারানো মানে হলো আমাদের বাতাসের চাপ ২১ শতাংশ হারানো। এতো দ্রুত বাতাসের চাপে পরিবর্তন অনেকটা হঠাৎ করে সমুদ্রের দুই হাজার মিটার নিচে পতিত হওয়ার মতোই। আমাদের কান এতো দ্রুত পরিবর্তন সহ্য করতে পারবেনা।

সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌছানোর আগে, বায়ুমন্ডলে থাকা বিভিন্ন উপাদানের সাথে প্রতিফলিত হয়। অক্সিজেন না থাকলে বায়ুমন্ডলে এসব উপাদানের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কমে যাবে। ফলে সূর্য রশ্মি প্রতিফলিত না হওয়ায় আকাশ পুরো অন্ধকার হয়ে যাবে।

পৃথিবীর ভূত্বক বা উপরিভাগের উপাদানের মধ্যে ৪৬ ভাগ অক্সিজেন রয়েছে। তাই অক্সিজেন ছাড়া ভূত্বকের শক্ত আবরনও ভেঙ্গে পরতে থাকবে। ধসে পড়বে উপরিভাগের সব ভবন আর স্থাপনা। বাদ যাবে না মানুষ আর প্রাণীও। তাই বলা যায়, মাত্র পাঁচ সেকেন্ড অক্সিজেন ছাড়া ধ্বংস হয়ে যাবে পুরো পৃথিবী।

https://facebook.com/rumman.naik

https://aliahmedonline.wordpress.com/

https://facebook.com/aliahmedunofficial

সূত্র: bn.quora.com

m.dailyhunt.in