সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০২২

স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার; এক মহাজাগতিক দুর্ঘটনা



চ্যালেঞ্জারের অসমাপ্ত মিশন

এক মহাজাগতিক দুর্ঘটনার উপাখ্যান!


বিংশ শতাব্দীর আশির দশকের কথা। নাসার স্পেস শাটল প্রোগ্রাম জনসাধারণের জন্য তখন মামুলি ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। জনসাধারণ শাটল নিয়ে আগ্রহ অনেকখানি কমে গিয়েছিল। কিন্তু আমেরিকান কংগ্রেসের কাছে শাটল টিকিয়ে রাখার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট পেতে জনগণের সমর্থন খুবই দরকার ছিল।


তাই তারা সিদ্ধান্ত নিল এক যুগান্তকারী পদক্ষেপের। নাসা প্রথমবারের মতো স্পেস স্টেশানে কিছু বাচ্চাদের পড়ালেখা করানো হবে বলে ঠিক করে। এবং সেটা সারা পৃথিবীতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এটা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও নাসা একটা বার্তা দিতে চেয়েছিল যে মহাকাশ সবার জন্য। এর নাম দেওয়া হয় এসটিএস-৫১- এল মিশন।


এই প্রোগ্রামের জন্য একজন শিক্ষক দরকার ছিল। তাই মহাকাশে যাবার জন্য ১০০০০ জন শিক্ষক আবেদন করেন। এদের মধ্যে বাছাইক্রিয়া শেষে ক্রিস্টা নামের একজন শিক্ষিকা নির্বাচিত হন। তিনি স্পেসে নেওয়ার জন্য সকল প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন।


স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার ওই শিক্ষিকাসহ ৭জনকে স্পেসে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। কিন্তু লঞ্চিংয়ের আগের দিন ফ্লোরিডার তাপমাত্রা মাইনাস ৬ ডিগ্রীতে নেমে আসে। এতে স্পেস শাটলটি পরের দিন ঠিকমতো উড়তে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা যায়। আশঙ্কা দেখা যায় যে স্পেস শাটলটির সলিড রকেট বুস্টার অনেক তাড়াতাড়ি জ্বালানী পুড়িয়ে একটা বোমায় পরিণত হবে। নাসার সব এঞ্জিনিয়াররা শাটলটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাই পরদিনই শাটলটিকে ওড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


লঞ্চিং প্যাডের কাছে সেদিন উপস্থিত হয়েছিল প্রচুর জনগণ। ক্রিস্টার পরিবারসহ তার শিক্ষার্থীরাও সেদিন ওখানে ছিল। সবাই অপেক্ষা করছিল ঐতিহাসিক একটা দিনের।


১৯৮৬ সালের ২৮ই জানুয়ারিতে নির্দিষ্ট সময়ে চ্যালেঞ্জারের ২৫ তম উড্ডয়ন শুরু হয়। ফ্লোরিডা থেকে ২ কি.মি উচ্চতায় ওঠার পর বোঝা যায় যে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। উড্ডয়নের ৭৩ সেকেন্ড পর কিছু ঠিকমতো বুঝে ওঠার আগেই বুম!!!! সবার চোখের সামনে শাটলটি বিরাট একটা বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস হয়ে যায়। সবাই হতবাক চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল এবং হয়তোবা ভাবছিল, " এটা কি হলো?" মহাকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে গিয়ে মহাকাশ বীর হয়ে তাদের নিহত হতে হলো।


এই ঘটনার পর নাসার যথেষ্ট উদ্দিগ্ন হবার কারণ ছিল। স্পেস শাটলের আর কোনোদিন উড্ডয়ন হবে কিনা তাইই ছিল অনিশ্চিত। কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে স্পেস শাটল আরো অনেকদিন অনেক মিশন সম্পন্ন করেছে। কিন্তু চ্যালেঞ্জার দুর্ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছিল যে নভোচারীরা কতোটা ঝুঁকি নিয়ে মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচনে অটল থাকেন।


বিস্ফোরণের মর্মান্তিক সেই ভিডিওটি দেখুন এখানেঃ https://www.youtube.com/watch?v=fSTrmJtHLFU&feature=share


চীনের প্রাচীর কি মহাশূন্য থেকে দেখা যায়?

চীনের প্রাচীর কি  মহাশূন্য থেকে দেখা যায়?

চীনের প্রাচীর একমাত্র মানবসৃষ্ট বস্তু যেটা চাঁদ থেকে বা মহাশূন্য থেকে দেখা যায় বলে প্রচলিত আছে। কিন্তু এটি পুরোপুরি ভুল তথ্য।

মানবসৃষ্ট কোনো বস্তুই চাঁদ থেকে দেখতে পাওয়া সম্ভব নয়। দৈর্ঘ্য যা-ই হোক না কেন একটা নির্দিষ্ট পরিমান প্রস্থ না থাকলে সেই জিনিসকে আলাদাভাবে শনাক্ত করা যাবে না। যেমন: চুল। আমরা যদি একটি লম্বা চুল নিয়ে সেটিকে দূর থেকে দেখার চেষ্টা করি তাহলে চুলের দৈর্ঘ্য যথেষ্ট বেশী থাকা সত্ত্বেও তা সরু হওয়ায় আমরা দেখতে পাব না।

চীনের প্রাচীর 


চীনের প্রাচীর যদিও দৈর্ঘ্যে যথেষ্ট লম্বা কিন্তু এটি প্রস্থে মাত্র ৩০ ফুট। সেই হিসেবে চীনের প্রাচীরের চেয়ে আরো অনেক বেশী যোগ্যতা সম্পন্ন মানবসৃষ্ট বস্তু আছে যেগুলো ৩০ ফুটের চেয়ে অনেক অনেক বেশী চওড়া। ৭০ মাইল চওড়া হতে হলে ১২০০০ টিরও বেশী চীনের প্রাচীরকে পাশাপাশি যুক্ত করতে হবে।হিসেব করে দেখা যায় চাঁদ থেকে যদি পৃথিবীর কোনো বস্তুকে দৃষ্টিগোচরে আনতে হয় তাহলে তার মাত্রা হতে হবে অন্তত ৭০ মাইল বা ১১০ কিলোমিটার। দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের যেকোনো একটিতে যদি এর চেয়ে পরিমান কম হয় তাহলে সেই বস্তুটিকে চাঁদ থেকে সনাক্ত করা যাবে না।

https://facebook.com/rumman.naik

আধুনিক পদার্থবিদ্যার জনক কে?

 আধুনিক পদার্থবিদ্যার জনক কে?


আধুনিক পদার্থবিদ্যা কে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। থিওরি অফ রিলেটিভিটি এবং কোয়ান্টাম ফিজিক্স। সেক্ষেত্রে,রিলেটিভিটির জনক স্যার আলবার্ট আইনস্টাইন এবং,কোয়ান্টাম ফিজিক্সের জনক স্যার ম্যাক্স প্লাঙ্ক।


কিন্তু, একটি নতুন পদার্থবিদ্যার যুগ শুধু একজন মানুষের হাত ধরে আসেনা। পদার্থবিদ্যার নতুন যুগ, বহু অজ্ঞাতনামা বিজ্ঞানীদের শত রাত জাগা "পরিশ্রমের ফল। সেখানে,শুধু একজন কে "জনক" উপাধি দেওয়ার কোনো মানে হয়না।


ফিজিক্সের শুরুটা হয়েছিলি আর্কিমিডিসের হাতে। তবে সেটা ঠিক ফিজিক্স বলা যায় কিনা সন্দেহ আছে। কারণ, তিনি বলবিদ্যার অনেক প্রয়োগ জানতেন কিন্তু গণিতের ছাঁচে সেটা ফেলতে পারেননি। গ্যালিলিওকেও ফিজিক্সের জনক বলা হয়। কিন্তু সত্যিকার ফিজিক্সের জন্ম নিউটনের হাত ধরে।

গ্যালিলিও গ্যালিলি, স্যার আইজ্যাক নিউটন এবং অ্যালবার্ট আইনস্টাইন এই তিনজনকে সম্মিলিতভাবে (fathers of physics) পদার্থ বিজ্ঞানের জনক বলা হয়।

রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২

সূর্যের নিকটতম তাঁরা

 





সূর্যের নিকটতম তাঁরা


বিলিয়ন বিলিয়ন নক্ষত্রের ভিড়ে সৌরজগতের সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টরী। হ্যাঁ, এটিই সবচাইতে নিকটতম তাঁরা । সূর্যের নিকটতম প্রতিবেশি এই তাঁরাটির দুরত্ব ৪.৩ আলোক বর্ষ । আলোক বর্ষ হল বিশাল দুরত্ব মাপার জন্য ব্যবহৃত একক।
   আমরা জানি আলো প্রতি সেকেন্ডে প্রায় তিন লক্ষ কিলোমিটার দুরত্ব অতিক্রম করে। এই গতিতে আলোক রশ্মি এক বছরে যে পথ অতিক্রম করে তাই হল এক আলোক বর্ষ। কিলোমিটারে প্রকাশ করলে নিঃসন্দেহে এটি হবে একটি বিশাল সংখ্যা। ৪.৩ আলোক বর্ষ দুরত্বের যথার্থ অর্থ হল তাঁরকাটি থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগে ৪ বছর ৪ মাসের কাছাকাছি সময় যেখানে সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগে ৮ মিনিট।
  ঠিক এই মূহুর্তে যদি তাঁরকাটি নিভে যায় অর্থাৎ ধ্বংস হয়ে যায় আমরা কিন্তু সেটি বুঝতে পারবো ৪ বছর ৪ মাস রে। হ্যাঁ এই ব্যাপারটি মহাকাশে অহরহই ঘটে চলেছে। একটি তাঁরকা নেই কিন্তু বছরের পর বছর ধরে আমরা সেটি দেখছি তাই আলোর চেয়ে মজার ব্যাপার আর কি হতে পারে?

পৃথিবীর প্রথম রঙিন ছবি

১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে তোলা পৃথিবীর প্রথম রঙিন ছবি

পৃথিবীর প্রথম রঙিন ছবি

১৯৭২ সালের ডিসেম্বরের শুরুতে মহাকাশ থেকে তোলা হয় পৃথিবীর প্রথম রঙিন পূর্ণ অবয়ব বিশিষ্ট ছবি। অ্যাপোলো -১৭ নভোযানে করে যখন নভোচারীরা পৃথিবীর কক্ষপথ ছেড়ে চাঁদের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন তখন ছবিটি তোলা হয়।

এই বিখ্যাত ছবিটিকে আমরা "নীল মার্বেল" (Blue Marble) নামে চিনি। সূর্য তাদের পেছনে অবস্থান করায় অতি উজ্জ্বলভাবে আলোকিত এই নীল গ্রহটির চমৎকার ফটোটি তুলে ফেলেন তাদের ক্যামেরায়। তবে এর আগেও আরো তিনবার পৃথিবীর ছবি তোলা হয়েছে।

  1.  ১৯৪৬ সালের ২৪ অক্টোবর বায়ুমণ্ডলের বাহিরে ভুমি থেকে মাত্র ৬৫ মাইল উপর থেকে প্রথম মহাকাশ থেকে পৃথিবীর সাদাকালো ফটো তোলে ভি-২ নামক রকেটে সংযুক্ত ক্যামেরা।
  2. তারপর ১৯৪৭ সালের মার্চে তোলা হয় আরেকটি ছবি। ১০১ মাইল উচ্চতা থেকে। 
  3. ১৯৬৬ সালের ২৩ অগাস্ট লুনার অরবিটার-১ নামের নভোযান থেকে সুদুর ২ লক্ষ ৩৬ হাজার মাইল দূর থেকে তোলা হয় আরেকটি ছবি।

ফেসবুকে আমি  https://facebook.com/rumman.naik

শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২২

সাপ কি দুধ খায়? দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা; একটি ভ্রান্ত ধারণা

"দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পোষা"


সাপ কি দুধ খায়?



 সাপ কি দুধ খায়?


 বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয় একটি বাগধারা আছে "দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা"।

বাগধারা টি এই অর্থে ব্যবহৃত হয়. দুধ সুষম খাবার, শুধু আয়রণ উপাদানে একটু ঘাটতি আছে যেটা কলায় প্রচুর পরিমাণ আছে। অর্থাৎ সব পুষ্টিকারক খাবার খাইয়ে শত্রুকে পোষা। বাগধারা তো বাগধারা ই। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাগধারাটি সম্পূর্ণ ভুল। কারণ সাপ কখনো পোষ মানেনা। তারচে মজার ব্যাপার হলো সাপ কখনোই দুধ বা কলা খায়না।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে গিয়ে সাপ কেনো দুধকলা "খায়না? অনেকেই তো বলেন সাপ দুধ খায়, তাহলে?

  আমরা যা খাই সব খাবারই আমিষ, শর্করা ও স্নেহ জাতীয়। প্রতিটা খাবার হজম করার মতো এনজাইম আমাদের পাকস্থলী ও নাড়িভুঁড়িতে আছে। 

 আমরা জানি, গরু একটি তৃণভোজী প্রাণী। গরুকে আপনি কাঁচা বা রান্না করা মাংস খাওয়াতে পারবেননা। গরু মাংস কখনোই খাবেনা। তার পেটে এটা হজম হবেনা। মাংস হজম করার মতো এনজাইম গরুর পেটে থাকেনা। লতাপাতা ও ঘাস হলো গরুর খাদ্য।

  ঠিক তেমনিভাবে সাপ হলো সম্পূর্ণ মাংসাশী প্রাণী। সাপের পেটে প্রোটিন বা মাংস হজমের এনজাইম থাকে। তাই এরা শুধুমাত্র পোকামাকড়, ইঁদুর, ব্যাঙ, ডিম, ছোটছোট প্রাণী খায়। সাপের পেটে দুধকলা হজম করার মতো এনজাইমও নেই। যেটা হজম হবেনা সেটা খেলে হজমজনিত সমস্যায় সাপের খুব ক্ষতি হয় এমনকি সাপটি মারা ও যেতে পারে। তাছাড়া সাপের জিহ্বা খুব সরু, চোষণ করার উপযোগী নয়। আর সাপের জিহ্বা চোষার জন্য নয়, বরং সাপের জিহ্বা হলো পথ নির্দেশক স্বরূপ।

  • দাঁড়াস সাপের লেজে নাকি বিষাক্ত কাঁটা আছে তাই লেজ দিয়ে মারলে ক্ষতস্থান পঁচে যায় 


প্রথমেই বলি পৃথিবীতে এমন কোনো সাপ নেই যার লেজে বিষাক্ত কাঁটা আছে । যারা বিষধর সাপ তাদেরও মুখে বিষ থলিতে বিষ থাকে । দাঁড়াস সম্পূর্ণ নির্বিষ আর লেজেও কোনো কাঁটা নেই । এগুলো ভ্রান্ত ধারণা ছাড়া কিছুই নয়। এই পা পঁচে যাওয়ার গুজব টা আমি আমার দিদার কাছ থেকে শুনেছি। আমার দিদাও তার দিদার কাছ থেকে শুনেছে। কেউই দেখিনি তবে বিশ্বাস করি এটা একটা নির্ভেজাল কুসংস্কার। কোনোও কালে কোথাও কেউ কি নাকি দেখেছে সেটাকে গরুর দুধ খাওয়া বলে চালিয়ে দিচ্ছে। যে যাই বলুক, সত্যটা হলো আজো পর্যন্ত পৃথিবীর কেউ নিজ চোখে সাপকে গরুর দুধ পান করতে দেখেছেন বলে প্রমাণ করতে পারেননি। 

  দারাস সাপ ইঁদুর বা ব্যাঙ ধরতে গোয়াল ঘরে ঢুকে পড়ে। গরু সাপ দেখে ভয়ে লাফাতে থাকে। গরুর লাফালাফি দেখে সাপ ভয় পেয়ে গরুর পায়ে প্যাচিয়ে জড়িয়ে ধরে। দেখে মনে হয় সাপ গরুর দুধ খাচ্ছে। 

  একটা প্রশ্ন থেকে যায় এখানে, তা হলো গিয়ে হিন্দুদের পুজায় নাগপঞ্চমীতে সাপকে দুধ খেতে দিলে খায় কেনো?

 আসলে হচ্ছে কি,সাপুড়িয়া সাপকে পিপাসিত করার জন্য অনেকদিন ধরে পানি না দিয়ে তৃষ্ণার্ত রাখে। তারপর তৃষার্ত সাপের সামনে যখন দুধের বাটি এগিয়ে দেয় তখন সাপ দুধ খায়। তৃষ্ণার্ত সাপ তখন মুখের সামনে পানিজাতীয় যা পায় এমনকি কোক, স্প্রাইট তাই খাবে। 

ফেসবুকে আমি facebook.com/rumman.naik

সাপ পরিচিতি-২ গোখরো

সাপ পরিচিতি, গোখরো সাপ



সাপের নাম:গোখরো, পদ্মগোখরো, খইয়া/ খৈয়া গোখরো, খরিস, নাগ

ইংরেজি নাম: Spectacled cobra.Indian cobra.Asian cobra. Binocellate cobra. 

Scientific name: Naja Naja, N naja.


  •  ভারতীয় উপমহাদেশ তথা এশিয়া মহাদেশের অন্যতম এক বিষধর সাপ হল এই স্পেক্টাকল্ড কোবরা বা গোখরো সাপ। এই জাতীয় সাপ তাদের ফণার জন্য বিখ্যাত ও পরিচিত। ঘাড়ের কাছে হাড়কে সম্প্রসারণ করে ফণা মেলে ধরে তখন চমৎকার ফণাটি বিস্তৃত হয়। গোখরো প্রজাতির সকল সাপই উত্তেজিত হলে তার ফণা মেলে ধরে। এই কোবরা ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও মিশর, আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, বার্মা, চীন ইত্যাদি দেশ ও অঞ্চলে দেখা যায়। আর ভারতে এই সাপ এতোই বেশি যে প্রায় প্রতিটি ঘরেই কোনো না কোনো দিন এই সাপের দেখা পাওয়া যায়। এই সাপের কামড়ে প্রতিদিন অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটে ভারতে।


  • পরিচিতি:

  • এই সাপ চেনার সহজ উপায় হলো, ফণার পিছন দিকে "U" এর মতো চিহ্ন থাকে, অথবা পুরনো দিনের ডাঁটিছাড়া জোড়া চোখের চশমার মতো দাগ থাকে। যার দরুন এই কারণেই সাপটির নামকরণ করা হয় specticled cobra নামে। বাঙ্গালিরা এটাকে গোখরা সাপ নামে চেনে। ইন্ডিয়ায় এটাকেই নাগ/ নাগিন বলে।
  • প্রজনন :
  • ভারতীয় কোবরা ডিম পাড়ে এবং এপ্রিল থেকে জুলাই মাসের মধ্যে ডিম দেয়। নাগিন বা স্ত্রী সাপগুলো তখন সাধারণত মানুষের বসতবাড়ির কাছে এসে ইঁদুরের গর্ত গুলোতে ঢুকে পড়ে। তারা ১০ থেকে ৩০ টি ডিম দেয় এবং ডিমগুলো ফুটতে ৫০ থেকে ৭০ দিন সময় নেয়। কোবরার বাচ্চাকাচ্চারা ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। বেবি কোবরা গুলো জন্ম থেকেই স্বাধীন এবং বড় কোবরা গুলোর মতো সম্পূর্ণভাবে বিষাক্তও।


  • বিষ:
  • এদের বিষে রয়েছে neurotoxin ও cardiotoxin, যে বিষ খুবই মারাত্মক। যা সরাসরি নার্ভ ও পেশীগুলোতে আঘাত করে। যার ফলে স্নায়ুগুলো অকেজো হয় পড়ে। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়, হৃদযন্ত্রের কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সঠিকভাবে চিকিৎসা না হলে মৃত্যু অনিবার্য।
    • সুতরাং, সবার কাছে রিকোয়েস্ট একটাই। কাউকে বিষাক্ত সাপে কামড়ালে কোনো কবিরাজ বা ওঝার কাছে না গিয়ে সরাসরি সরকারি হসপিটালে যাবেন। আর অধিকাংশ সাপ কিন্ত বিষধর নয় তাই সাপের কামড় মানেই মৃত্যু নয়। অনেকেই নির্বিষ সাপকে বিষাক্ত মনে করে হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়।


ফেসবুকে আমার পেজ➡️⤵️

 facebook.com/aliahmedunofficial

মাকড়সা নিজের জালে আটকে যায়না কেনো?


মাকড়সা নিজের জালে আটকে যায়না কেনো ?

শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২

মাইক্রোওয়েভ ওভেন যেভাবে কাজ করে


Microwave oven

প্রথম প্রথম খুব অবাক লাগত যে, আমি প্লেটে করে খাবার দিচ্ছি ওভেনে। খাবার গরম হচ্ছে, কিন্তু প্লেট গরম হচ্ছে না। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? কারণ ওভেন থেকে যে গরম বাতাস খাবারকে গরম করার কথা, তা তো একই সাথে প্লেটটিকেও গরম করার কথা! কিন্তু সেরকম তো হচ্ছে না!


যারা যন্ত্রটি সম্পর্কে সামান্য জানেন তারা ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছেন আমার উপরের ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল! ওভেনে আসলে এরকম কোনই যন্ত্র নেই যা থেকে কোন গরম বাতাস বের হয়ে খাবারকে গরম করে। 


আসলে ‘মাইক্রোওভেন’ এই নামটিতেই অনেকটা এর কাজের মূলনীতি লুকানো আছে। কি? ধরতে পারলেন না? ইংরেজিতে ব্যাপারটি পরিস্কার বুঝতে পারবেন।


Micro + wave + oven = Microwave oven (যাকে আমরা সচরাচর ‘মাইক্রোওভেন’ নামে ডেকে থাকি)।


মাইক্রোওভেন এ আসলে মাইক্রোওয়েভস এর মাধ্যমে খাবার গরম করা হয়। সাধারণত 2500 মেগা হার্জ বা 2.5 গিগা হার্জ এর তরঙ্গ ব্যবহার করা হয় এসব যন্ত্রে। এই কম্পাঙ্কের তরঙ্গের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। তা হল এই কম্পাঙ্কের তরঙ্গ কেবলমাত্র পানি, চর্বি এবং চিনি জাতীয় বস্তু দ্বারা শোষিত হয়। আর শোষিত হওয়া মাত্রই তরঙ্গটি আনবিক তাপগতিতে পরিণত হয় এবং বস্তুটিকে গরম করে। সিরামিক, গ্লাস এবং অধিকাংশ প্লাস্টিক এই তরঙ্গ শোষণ করতে পারে না, আর এই জন্যই ওভেনে পাত্র গরম হয় না এবং শক্তিরও অপচয় হয় না। এক ঢিলে দুই পাখি মারা আর কি।


মাইক্রোওভেনে কখনও ধাতব পাত্র ব্যবহার করা উচিত নয়। এটি বলা হয়ে থাকে কারণ ধাতব পাত্র মাইক্রো ওয়েবকে প্রতিফলিত করে এবং খাবার কে গরম হতে বাধা দেয়।

https://facebook.com/rumman.naik

সাপ পরিচিতি -১ কেউটে

সাপের নাম: কেউটে সাপ


ইংরেজি নাম: Monocled cobra, Monocellate cobra, Indian spitting cobra

সায়েন্টিফিক নাম: Naja kaouthia

হিন্দী নাম: নাগ/নাগিন, नाग/नागिन


 এই সাপটি হলো গোখরা প্রজাতির একটি সাপ যা দক্ষিণ এশিয়ায় দেখা যায়। এ প্রজাতির সাপ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও মিশর, আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, বার্মা, চীন ইত্যাদি দেশ ও অঞ্চলে দেখা যায়।


পরিচিতি:

কেউটে সাপের ফণার পিছনে গরুর ক্ষুরের মত একটা চিহ্ন থাকে যার থেকে বাংলা গোক্ষুর নামটি এসেছে। অন্যদিকে ইংরেজিতে মনোকলড অর্থ হল একচোখা। এ সাপটিকে মনোকলড বলার কারন হল এই সাপের ফণার পিছনে ইংরেজি "0" এর মতো গোল দাগ থাকে যা দেখতে একচোখা চশমার মত লাগে তাই এর ইংরেজি নাম মনোকল্ড কোবরা। এই চিহ্নের দ্বারা স্পেক্টাকল্ড কোবরা ও মনোকলড কোবরা কে আলাদা করা যায়।


সকল গোখরা প্রজাতির সাপ উত্তেজিত হলে ফণা মেলে ধরে। সাপের ঘাড়ের লম্বা হাড় স্ফীত হয়ে ওঠে, তাতে চমৎকার ফণাটি বিস্তৃত হয়।

অনেকে ভুলবশত গোখরা/কেউটে বলতে শুধুমাত্র স্পেকটাকলড কোবরা বা মনোকল্ড কোবরাকে বুঝে থাকে। এটি আসলে একটি বৃহৎ সর্পগোষ্ঠির সাধারণ নাম।


কেউটে সাপ মুলত নিশাচর। তবে ভাের এবং সন্ধ্যায় এরা বেশি আনাগোনা করে থাকে। এরা জলাশয়ে থাকতে বেশি পছন্দ করে। মানুষের বসতবাড়ির আশেপাশে, চাষের জমি, বনাঞ্চল বা ধানক্ষেতের আশেপাশের ইদুরের গর্তে থাকতে ভালবাসে। জলাভূমি, কৃষিজমি, ধানের গােলায়, ছােটোখাটো ঝােপঝাড়, পুকুরের ধারে এবং গাছের কোঠরেও দেখা যায় এদের। সাপ ছোট থেকে ছোট জায়গায় তাদের বাসস্থান করে নিতে পারে।


প্রজনন :

কেউটে সাপেরা জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে একসাথে ২০-৩০ টা ডিম পাড়ে। ৫৫ -৭০ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বেরােয়। বড়দের মতো জন্মলগ্ন থেকেই ছোট কেউটেদের বিষদাঁত ও বিষথলি থাকে। বেবি কোবরা গুলো জন্ম থেকেই স্বাধীন এবং বড় কোবরা গুলোর মতো সম্পূর্ণভাবে বিষাক্ত ও। প্রাপ্তবয়স্ক সাপেদের চেয়ে তাদের বাচ্চাকাচ্চাগুলো বেশি পরিমাণে বিষ ঢালে। কারণ, বিষধর সাপের বাচ্চাগুলো তাদের বিষথলিতে বিষ জমা রাখতে পারেনা। তাই তারা তাদের পুরো বিষটাই ছোবলের সময় মানুষের শরীরে ঢেলে দেয়।


বিষ:

এদের বিষে রয়েছে neurotoxins ও cytotoxins , যে বিষ খুবই মারাত্মক। যা সরাসরি নার্ভ ও পেশীগুলোতে আঘাত করে। যার ফলে স্নায়ুগুলো অকেজো হয় পড়ে। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়, হৃদযন্ত্রের কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়। 40/50 মিনিটস সময়ের মধ্যে সঠিকভাবে চিকিৎসা না হলে মৃত্যু অনিবার্য।


সুতরাং, সবার কাছে রিকোয়েস্ট একটাই। কাউকে বিষাক্ত সাপে কামড়ালে কোনো কবিরাজ বা ওঝার কাছে না গিয়ে সরাসরি সরকারি হসপিটালে যাবেন। আর অধিকাংশ সাপ কিন্ত বিষধর নয় তাই সাপের কামড় মানেই মৃত্যু নয়। অনেকেই নির্বিষ সাপকে বিষাক্ত মনে করে হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়।

সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২

টার্ডিগ্রেড; এক আশ্চর্যরকম প্রাণী

 



টার্ডিগ্রেড।।।
পৃথিবীর সব ধরনের দুর্যোগ থেকে বেঁচে ফেরার বিশ্বরেকর্ড সম্ভবত এই প্রাণীটির রয়েছে। জানেন কি, শত বিপদ ও প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও পৃথিবীতে টিকে থাকার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি কোন প্রাণীর?
পৃথিবী ধ্বংস বা সব মানুষ মারা যাবার পরও কি কোন প্রাণী বেঁচে থাকবে? যদি বেঁচে থাকে তাহলে সেই কঠিন প্রাণ প্রাণীটি কি?
যদি তারার বিস্ফোরণ বা গ্রহাণুর আঘাতে মানুষ ধ্বংস হয়ে যায় তবু টার্ডিগ্রেড প্রাণীদের কোন ক্ষতি হবে না। তাই যদি দেখা যায় প্রাণের বিনাশ ঘটছে তবুও একেবারেই প্রাণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে সেটা ধরে নেয়া যায় না।
এবার কঠিন প্রাণের এই টার্ডিগ্রেড বা ‘জল ভাল্লুক’ সম্পর্কে জানা যাক। ক্ষুদ্রাকৃতির এ প্রাণীটি উচ্চতায় সর্বোচ্চ অর্ধ মিলিমিটার হয়ে থাকে। কোন প্রকার খাবার ও জল ছাড়াই এরা বেঁচে থাকতে পারে ৩০বছর পর্যন্ত। ঘরের শীতল আবহাওয়া কিংবা সর্বোচ্চ ১৫০ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাও এটি সহ্য করতে পারে।
মহাশূণ্যর পরম শূণ্যতা –ভাবুন তো কোন বদ্ধ জায়গায় বা একটু বাতাস কম জায়গায় আমাদের কেমন শ্বাসবন্ধ লাগে। বাতা্স(অক্সিজেন) ছাড়া আমরা বা অন্য প্রাণীরা কিছুক্ষণের মধ্যেই অক্কা। কিন্তু এই ‘টার্ডিগ্রেড’ পরম শূণ্যতায় টিকে থাকতে পারে। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অনেক প্রানীদের সাথে টার্ডিগ্রেডদেরও মহাকাশে পাঠিয়েছিলেন। মানুষ স্পেসস্যুট ছাড়া মহাশূণ্যে গেলে মারা যাবে। চাপশূণ্যতার জন্য ফুসফুস ফেটে যাবে, সাথে রক্তবাহী নালী। তাছাড়া বিভিন্ন তেজস্ক্রিয়তার কামড় তো আছেই। অথচ ২০০৭ সালে মহাকাশবিজ্ঞানীরা কিছু টার্ডিগ্রেডকে একটা স্যাটেলাইটের পেছনে করে মহাশূণ্যে পাঠিয়েছিলেন। এরা শুধু বেঁচেই ফেরেনি, কিছু কিছু টারডিগ্রেড ছানাপোনাও জন্ম দিয়ে ফেলেছিলো মহাশূণ্যে! পরম শূণ্যতা (absolute vacuum) থেকে ঘুরে এসে ফুল ফ্যামিলি বহাল তবিয়তে ছিলো। কী সাংঘাতিক!
পরম শূণ্যতায় যেমন চাপহীন পরিবেশে এরা বেঁচে থাকতে পারে তেমনি সমুদ্রপৃষ্ঠের ১২০০ গুণ বেশি চাপ সহ্য করতে পারে। কিছু কিছু প্রজাতির টার্ডিগ্রেড সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে ৬০০০ গুণ বেশি চাপ বহন করতে পারে। এই চাপ পৃথিবীর গভীরতম সাগর ট্রেঞ্চ, ‘ম্যারিয়ানা ট্রেঞ্চ’ এর ছয়গুণ। ‘’চাপে চিঁড়েচ্যাপ্টা’’ কথাটা এই টার্ডিগ্রেডরা তেমন জানেনা বলে বোঝা যাচ্ছে!

বুধবার, ২ মার্চ, ২০২২

বিমানের দিকে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করা কেন অপরাধ?

বিমানের দিকে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করা কেন অপরাধ?

আকাশে যদি একটি লেজার লাইট মারা হয়, তাহলে আপনার মনে হতে পারে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত যেয়ে এ লাইট নিশ্চয় থেমে যাবে। আকাশে উড়া বিমান পর্যন্ত হয়তো পৌঁছাবে না। তবে এ কথা সত্য নয়।  এমনকি একটি খুবই স্বল্প মানের শক্তি সম্পন্ন লেজার রশ্মি বিমান যে উচ্চতায় সচরাচর উড়ে, সে উচ্চতা পর্যন্ত যেতে সক্ষম। নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন। একটি এক মিলিওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন লেজার রশ্মি ২০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত ঠিকঠাকভাবে পৌঁছে গেছে।  এই লেজার রশ্মি বিমানের পাইলটের অস্বস্তির কারণ হতে পারে। এমনকি এ লেজার রশ্মি পাইলটের চোখে গেলে পাইলট সাময়িক অন্ধও হয়ে যেতে পারেন।  আরেকটি বিষয় একটু লক্ষ্য করুন। একটি রশ্মি যত দূড় যাবে, এটির বিস্তৃতিও তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। একটি মিলিমিটার ডট আকারের লেজার রশ্মি কয়েক কিলোমিটার দূড়ে এক ইঞ্চি পরিমাণ বিস্তৃতি জায়গা জুড়ে দিতে পারে। এতে বিমানের পাইলট নানা ভুল ধারণা পেতে পারেন ও বিমান চালানোর সময় নানা ভাবে বিরক্তি বোধ করতে পারেন। এর ফলাফল স্বরূপ বিমানের ক্র্যাশ ল্যান্ডিংও হতে পারে।  শাস্তি  আমেরিকার ফেডারেল কোর্টের নিয়ম অনুসারে প্রয়োজন ছাড়া বিমানের উদ্দেশ্যে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। ২০০৮ সালের অক্টোবরে ক্যালিফোর্নিয়ার একজন ব্যক্তিকে ৩ মিলিওয়াটের একটি লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করার কারণে ২ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। ২০১৩ সালে ১ মিলিওয়াটের বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন লেজার রশ্মির ব্যবহারকে নিউজিল্যান্ডে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের সংবিধানে ২০১৭ এর ধারা ২৬ অনুসারে বিমানকে লক্ষ্য করে লেজার রশ্মি নিক্ষেপ শাস্তিযোগ্য ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এ মর্মে গত ১৭ জুন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেবিচক।
 তথ্যসূত্র Laser Pointer Safety Com and Wikipedia

সমুদ্রের পানি নীল রং এর হয় কেন?

সমুদ্রের পানি নীল রং এর হয় কেন??

সমুদ্রের বিস্তৃত জলরাশিকে একসঙ্গে নীল দেখায়। আকাশে বাতাসের অণুর মতো সমুদ্রের বিস্তৃত জলরাশির অণুগুলো সূর্যরশ্মির নীল বর্ণকে চারদিকে ছড়িয়ে দেয়। ফলে বাইরে থেকে তাকালে সমুদ্রের জলরাশিকে নীল দেখায়।

আমরা জানি সূর্যের আলো বা রোদ মূলত ৭ টি ভিন্ন ভিন্ন রঙের সমষ্টি। বেগুনী, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। রঙগুলো বিশেষ মাত্রায় একের পর এক সাজানো থাকে। সূর্যের আলো যখন সমুদ্র পৃষ্ঠে পড়ে তখন লাল কমলা ও হলুদ রঙ সমুদ্রের জল কর্তৃক দ্রুত শোষিত হয় বটে, কিন্তু নীল রঙ আরও দ্রুত সমুদ্র গর্ভের প্রায় ৩০ মিটার পর্যন্ত ঢুকে পড়ে। যে কারণে রোদেলা দিনে সমুদ্রকে নীল দেখায়।

ক্যামেরায় তোলা সমুদ্রজলের ফটো 

নীল আকাশের প্রতিফলনের কারণে বড় লেক বা সমুদ্রের পানি নীল দেখায় এটা আমরা সাধারণভাবে ধরে নিই। কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়। আসলে পানির রঙ নীল এবং সে কারণেই মূলত সমুদ্র নীল দেখায়। কথাটা সহজে বিশ্বাস হয় না। মনে হয় পানির তো কোনো রঙ নেই। এক গ্লাস পানির দিকে তাকালেই এটা বোঝা যায়। তাহলে আমরা কীভাবে বলব যে পানির রঙ নীল? এ বিষয়টি বোঝার জন্য আমরা পানিতে আলোর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারি। পানির অনুগুরো কিছু পরিমাণ আলো শুষে নেয় এবং এ সময় নীলের চেয়ে লাল তরঙ্গের আলো বেশি শোষিত হয়। ফলে আলের মিশ্রণে পানি কিছুটা নীলাভ রঙ ধারণ করে। কিন্তু এটা এতই সামান্য যে সহজে বোঝা যায় না। সমুদ্র বা বড় লেকের পানির পরিমাণ ও গভীরতা বেশি বলে সেখানে নীলের আধিক্য চোখে ধরা পড়ে। তবে লবণ ও অন্যান্য খনিজের রঙও সমুদ্রের পানিতে কিছুটা দেখা যায়। পরিষ্কার নীল আকাশ থাকলে তার প্রতিফলনও সমুদ্রের পানিতে ঘটে কিন্তু সেজন্য সমুদ্র মোটামুটি শান্ত থাকতে হবে আর সেই নীল আকাশের ছায়া দেখার জন্য একটু নিচু হয়ে অন্তত ১০ ডিগ্রির কম কোণে তাকাতে হবে। অনেক সময় সমুদ্রের পানি সবুজ দেখায়, কারণ সমুদ্রে অনেক শৈবালজাতীয় সবুজ উদ্ভিদ থাকে। সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের সময় বালু ও মাটি সমুদ্রের পানির ওপরের দিকে চলে আসে। তখন সমুদ্রের পানি ঘোলা বা ছাই রঙ ধারণ করে।